ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমণের রেকর্ড
মহামারি শুরুর পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ভারতে একদিনে সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমণ ঘটেছে সোমবার। দেশজুড়ে এই দিন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ হাজার ২৯১ জন।
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে বরাবরই সংক্রমণের হার উচ্চ, সোমবারের চিত্রেও তার প্রতিফলন ঘটেছে। আক্রান্ত রোগীদের অর্ধেকেরও বেশি মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইসহ বিভিন্ন জেলার।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া সোমবার আরও যে কয়টি রাজ্যে সংক্রমণের উচ্চহার দেখা গেছে, সেগুলো হলো— কেরালা, পাঞ্জাব, কর্ণাটক, গুজরাট, তামিলনাড়ু, হারিয়ানা এবং মধ্যপ্রদেশ।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতে করোনা সংক্রমণের রেখচিত্র নিম্নমূখী ছিল; অনেকটা আকস্মিকভাবেই আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে দেশটিতে। তবে এতে বিস্মিত হননি ভারতের পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট এবং সরকারের করোনা প্রতিরোধী টাস্কফোর্সের অন্যতক পরামর্শক ডা. শ্রীনাথ রেড্ডি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে ডা. রেড্ডি বলেন, ‘আমি মোটেও বিস্মিত হইনি। এটা ঠিক, আমি একান্তভাবে প্রত্যাশা করছিলাম— সংক্রমণের হার যেন না বাড়ে, কিন্তু সবদিক বিবেচনা করলে (সংক্রমণের) আকস্মিক এই উল্লফন অবাক করার মতো কোনো ঘটনা নয়।’
বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘সংক্রমণের এই উচ্চহারের প্রধান কারণ দু’টি। প্রথমত, সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কয়েকটি ধরন শনাক্ত হয়েছে ভারতে, যেগুলোর সংক্রমণ ক্ষমতা প্রচলিত ধরনটির তুলনায় অনেক বেশি এবং দ্বিতীয়ত, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সাধারণ মানুষদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে ঢিলেমী লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
গত কয়েক মাসে করোনা বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল হয়েছে ভারতে; অফিস, রেস্তাঁরা, কমিউনিটি সেন্টার, সম্মেলন কেন্দ্র, সিনেমা হল –যাবতীয় অভ্যন্তরীন জনসমাগম ক্ষেত্র (ইনডোর স্পেস) খুলে দেওয়া হয়েছে এবং সেসব স্থানে যারা যাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই মাস্ক পরা বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছেন না।
ডা. রেড্ডি বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। খেয়াল করলে দেখা যাবে, ওই রাজ্যের পল্লী এলাকাগুলোর তুলনায় মুম্বাই, থানে, পুনে, নাগপুর ইত্যাদি নগরাঞ্চলগুলোতে সংক্রমণ বাড়ছে অধিক হারে।'
`এর প্রধান কারণ, সেখানকার ইনডোর স্পেসগুলোতে যারা যাচ্ছেন, বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। একই কথা অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।’
গত বছর বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পরই তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। করোনা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, ভারতে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭০ এবং এ রোগে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছেন ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৯২ জন।
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ভারত। এখন পর্যন্ত দেশটির প্রায় তিন কোটি মানুষকে টিকার আওয়তায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সূত্র: বিবিসি
এসএমডব্লিউ