রাতের আঁধারে দামেস্কে ইসরায়েলের মিসাইল হামলা, নিহত ৫
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে দামেস্কের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় মিসাইল হামলা ও হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ভোরে ইসরায়েলি রকেট দামেস্কের মধ্যাঞ্চলীয় কাফর সুসা এলাকার আশপাশের একটি ভবনে আঘাত হানে। হামলার শিকার ওই এলাকাটি দামেস্কে অবস্থিত ইরানি স্থাপনার কাছাকাছি বড় ও ব্যাপকভাবে সুরক্ষিত নিরাপত্তা কমপ্লেক্সের পাশে অবস্থিত।
রয়টার্স বলছে, ইসরায়েলের নজিরবিহীন এই টার্গেটেড হামলার কারণে সিরিয়ার রাজধানীর কেন্দ্রস্থল বলে পরিচিত ওমাইয়াদ স্কোয়ারের কাছে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মূলত সেখানকার আবাসিক এলাকার মধ্যে বহুতল নিরাপত্তা ভবনও অবস্থিত।
সিরিয়ার একজন পুলিশ কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, ইসরায়েলের এই হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র এই হামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
সামরিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া বলছে, মধ্যরাতের পরপরই রাজধানী দামেস্কের বেশ কয়েকটি এলাকা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আরও ১৫ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া হামলায় বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিরীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসরায়েলের এই হামলা বেশ কয়েকটি বেসামরিক বাড়িঘর এবং দামেস্ক ও এর আশপাশের এলাকায় বস্তুগত ক্ষতি করেছে।’
অবশ্য কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি।
এর আগে ইরান-পন্থি সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ইমাদ মুঘনিয়াহ ২০০৮ সালে কাফর সুসাতে একটি বোমা হামলায় নিহত হন। ভারী নিরাপত্তা বলয়ে অবস্থিত দামেস্কের এই এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, সেখানে একটি প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি ইরানি নিরাপত্তা সংস্থার অবস্থান রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল এই দেশটির অভ্যন্তরে শত শত বিমান হামলা চালিয়েছে। সরকারি নানা স্থাপনার পাশাপাশি মিত্র ইরান-সমর্থিত বাহিনী এবং হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েল অবশ্য খুব কমই সিরিয়ায় এই ধরনের অভিযানের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করে থাকে।
এছাড়া ইরান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিরিয়ায় তার সামরিক উপস্থিতি আরও বাড়িয়েছে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটির রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত বেশিরভাগ অঞ্চলেই তেহরানের উপস্থিতি রয়েছে। এমনকি ইরানের নেতৃত্বে হাজার হাজার মিলিশিয়া এবং স্থানীয় আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্যরা সিরিয়ায় অবস্থান করছে বলে পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্রগুলো দাবি করছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার কখনোই প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি যে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ইরানি বাহিনী তার পক্ষে কাজ করছে। বরং আসাদ সরকার বলেছে, সিরিয়ার মাটিতে শুধুমাত্র তেহরানের সামরিক উপদেষ্টা রয়েছে।
টিএম