অভিন্ন নদীর পানি-বণ্টন এবং বন্যার পূর্বাভাস সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ এবং ভারতের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের আগে মঙ্গলবার দিল্লিতে এই বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে সোমবার সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)।

সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিআই বলছে, দিল্লির ওই বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির জল শক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব পঙ্কজ কুমার। অন্যদিকে, বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার।

সূত্রগুলো বলছে, বৈঠকে উভয় পক্ষ মানু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতি, দুধকুমার এবং ধরলা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা করবেন। 

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার সাবরুম শহরের জন্য ফেনী নদী থেকে পানি তুলে নেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

এছাড়া সুরমা নদী থেকেও পানি নেওয়ার বিষয়ে দুই দেশের মাঝে একটি সম্ভাব্য সমঝোতা স্মারক নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ে পানি বণ্টন সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য ভারত এবং বাংলাদেশের মাঝে শক্তিশালী একটি ব্যবস্থা আছে। দ্বিপাক্ষিক পানি সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৭২ সাল থেকে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) কাজ করছে।

দুই দেশের অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সর্বাধিক ফলপ্রসূ যৌথ প্রচেষ্টা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যোগাযোগ রক্ষায় এই কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এই কমিশনের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মন্ত্রী, সচিব এবং কৌশলগত বিশেষজ্ঞদের মাঝে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ দু’দিনের সফরে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওইদিন স্বাধীনতা দিবসের প্রধান অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি।

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার পিটিআইকে বলেন, বিদেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের কিছু অভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। তবে নরেন্দ্র মোদির সফর একটু সম্প্রসারিত করা হয়েছে; তিনি ঢাকার বাইরে অন্তত তিনটি স্থানে যাবেন।

নরেন্দ্র মোদি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার এবং ঢাকার বাইরে দু’টি হিন্দু মন্দির পরিদর্শন করবেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশে আসেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর অত্যন্ত স্মরণীয় হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক সত্যিকার অর্থেই ৩৬০ ডিগ্রি অংশীদারিত্বমূলক বলে মন্তব্য করেন জয়শঙ্কর।

এসএস