ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনের সঙ্গে পুরনো একটি সামরিক চুক্তি সম্প্রসারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ফিলিপাইনের আরও চারটি সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন মার্কিন সেনারা।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সামরিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার ফিলিপাইনে যান। তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্নিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে দেখা করেন। এরপরই চুক্তি সম্প্রসারণের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয়।

চুক্তির ব্যাপারে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং ফিলিপাইন গৌরবের সঙ্গে ঘোষণা দিচ্ছে, ইনহান্স ডিফেন্স কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্টের (ইডিসিএ) আওতায় ফিলিপাইনের পাঁচটি সামরিক ঘাঁটির অসমাপ্ত কাজ দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করতে এবং আরও নতুন চারটি সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্র এবং ফিলিপাইনের মধ্যে কয়েক দশকের সামরিক সম্পর্কের একটি অংশ ইডিসিএ চুক্তি। এর মাধ্যমে ফিলিপাইনের পাঁচটি ঘাঁটিতে প্রবেশ এবং অবস্থান করতে পারেন মার্কিন সেনারা। যার মধ্যে রয়েছে বিরোধপূর্ণ জলসীমার কাছে অবস্থিত ঘাঁটিও।

এ চুক্তির মাধ্যমে ওই ঘাঁটিগুলোতে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ ও মজুদ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নতুন সম্প্রসারিত চুক্তি দুই দেশের সম্পর্ক আরও ‘শক্তিশালী ও সামরিক শক্তি আধুনিকায়নে সহায়তা করবে।’

তবে নতুন কোন চারটি ঘাঁটি ব্যবহারের সুযোগ মার্কিন সেনারা পাবেন সেটি উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু বলা হয়েছে, এ চুক্তির মাধ্যমে ফিলিপাইনে মানবিক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে সহায়তা আসতে সহায়ক হবে।

এদিকে ফিলিপাইনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এমন সময় এ চুক্তি সম্প্রসারণ করল যখন তাইওয়ান ঘিরে নিজেদের সামরিক কার্যক্রম বাড়িয়েছে চীন। এখন ফিলিপাইনের আরও নতুন ঘাঁটি ব্যবহারের মাধ্যমে চীনের কার্যক্রম কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।

অপরদিকে ফিলিপাইনের জন্যও চুক্তিটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে পূর্ব চীন সাগরে অবস্থিত নিজেদের বিরোধপূর্ণ অঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে তারা। পূর্ব চীন সাগরে যেসব অঞ্চল অবস্থিত সেগুলোর সবই নিজেদের দাবি করে থাকে চীন।

এদিকে গত বছর মার্কোস জুনিয়র ক্ষমতায় আসার আগে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন রদ্রিগো দুতার্তে। তিনি অনেকটা চীন ঘেঁষা ছিলেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতেন তিনি। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বেশ কয়েকবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন এবং মার্কিন সেনাদের ফিলিপাইন থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।

তবে মার্কোস জুনিয়র প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সবকিছু পাল্টে যায়। গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ফিলিপাইন সফরে গেলে দুই দেশের মধ্যে আবারও উষ্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়।

সূত্র: আল জাজিরা

এমটিআই