ট্যাংক পাওয়ার প্রতিশ্রুতির পরদিনই ইউক্রেনে রুশ হামলা, নিহত ১১
ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির নানা শহরে চালানো ওই হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
কয়েকমাস ধরে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও অনিশ্চয়তার পর রুশ আক্রমণ মোকাবিলায় ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি ভারী ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার একদিন পর এই হামলার ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের জন্য ভারী ট্যাংকের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার একদিন পর, বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হওয়া রুশ হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন।
এর আগে বুধবার ইউক্রেনের জন্য ভারী ট্যাংক সরবরাহ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি। ওই দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, তারা ৩১টি অত্যন্ত শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক আবরাম ট্যাংক ইউক্রেনকে দেবেন।
হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ভালো ট্যাংক। গতবছর মার্কিন কংগ্রেস ইউক্রেনের জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই অর্থ দিয়েই এই ট্যাংক ও অন্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো হবে।
এর আগে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জানান, জার্মানি ইউক্রেনকে ১৪টি লিওপার্ড ২ ট্যাংক দেবে। পার্লামেন্টে শলৎস বলেন, তিনি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।
এএফপি বলছে, অনেক ইউক্রেনীয় যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। বাখমুত শহরের কাছ থেকে লিজা নামক এক ডাক্তার এএফপিকে বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি বেশ দ্রুত এবং আরও বেশি পরিমাণে হওয়া উচিত ছিল।’
বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, রাশিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে ১১ জন নিহত এবং আরও ১১ জন আহত হয়েছেন বলে ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবাগুলো জানিয়েছে।
আগের দিন পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ধ্বংস করা একটি ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরোর আঘাতে কিয়েভে ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী রাশিয়ার ছোঁড়া ৫৫টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৪৭টি ধ্বংস করেছে। তারা আরও জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইরানের তৈরি ২৪টি ড্রোন পাঠায় রাশিয়া। এর সবগুলোই ধ্বংস করা হয়েছে। ওই ২৪টি ড্রোনের মধ্যে ১৫টি পাঠানো হয়েছিল রাজধানী কিয়েভ ও আশপাশের অঞ্চলে।
মূলত গত বছরের অক্টোবর থেকে ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। আর এসব হামলায় তীব্র শীতের মধ্যে বিদ্যুৎ ছাড়া দুর্বিষহ সময় কাটাতে হয়েছে সাধারণ ইউক্রেনীয়দের।
বৃহস্পতিবারের হামলাও বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। ওডেসার স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, নতুন হামলায় দু’টি বিদ্যুৎ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ভিনিৎসিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার খবর পাওয়া গেছে।
পশ্চিমাদের ট্যাংক পাঠানোর বিষয়টি যে রাশিয়া ভালোভাবে নেয়নি, নতুন হামলা তারই ইঙ্গিত বহন করে।
টিএম