নাইজেরিয়ায় কয়েক দশক ধরে চলা সংঘাত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতিগত ও ধর্মীয় মাত্রা পেয়েছে। আফ্রিকার এই দেশটির বেশিরভাগ পশুপালক মুসলমান এবং কৃষকরা মূলত খ্রিস্টান (ফাইল ছবি)

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় সন্দেহভাজন বোমা বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। নাইজেরিয়ার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে গত মঙ্গলবার এই বিস্ফোরণ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

নাইজেরীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার উত্তর মধ্যাঞ্চলীয় এলাকায় সন্দেহভাজন বোমা বিস্ফোরণে কয়েক ডজন গবাদি পশুপালক ও পথচারী নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বুধবার দেশটির প্রাদেশিক সরকারের এক কর্মকর্তা এবং দেশটির জাতীয় গবাদি পশু পালনকারীদের মুখপাত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত মঙ্গলবার রাতে উত্তর মধ্য নাইজেরিয়ার নাসারাওয়া এবং বেনু প্রদেশের মধ্যে এই বিস্ফোরণ ও হতাহতের ঘটনাটি ঘটে।

নাইজেরিয়ার মিয়াত্তি আল্লাহ ক্যাটল ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র তাসিউ সুলেমান বলেছেন, ঘটনার দিন ফুলানি পশুপালকদের একটি দল বেনু থেকে তাদের গবাদি পশু নিয়ে নাসারাওয়ার দিকে যাচ্ছিল। তবে চারণ বিরোধী আইন লঙ্ঘনের দায়ে সেখানে কর্তৃপক্ষ পশুগুলোকে বাজেয়াপ্ত করে। পরে সেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

সুলেমান বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর কমপক্ষে ৫৪ জন তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এছাড়া বিস্ফোরণে আরও অগণিত মানুষ আহত হয়েছেন।’

এদিকে নাসারাওয়ার গভর্নর আবদুল্লাহি সুলে ওই বিস্ফোরণে ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন তা উল্লেখ করেনি। তবে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বোমা বিস্ফোরণের ফলে কিছু মৃত্যু হয়েছে।

এই বিস্ফোরণের পেছনে ঠিক কারা দায়ী সে সম্পর্কে কোনও কিছু উল্লেখ করেননি আবদুল্লাহি সুলে। তবে তিনি বলেছেন, উত্তেজনা প্রশমিত করতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, নাইজেরিয়ায় উত্তর-মধ্য অংশ ‘মিডল বেল্ট’ নামে পরিচিত। এই অঞ্চলটি প্রায়সময়ই অস্থিতিশীল হয়ে থাকে। ফুলানি গোষ্ঠীর সঙ্গে সেখানের স্থানীয় কৃষকদের জমির দখল ও ধর্মীয় কারণ নিয়ে সংঘর্ষই মূলত এই অস্থিতিশীলতার কারণ।

অন্যদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই অঞ্চলে কৃষিজমির আকার বৃদ্ধি পেলেও পশুপালকদের গবাদি পশু চরানোর জায়গা কমে গেছে।

প্রাদেশিক গভর্নরের মুখপাত্র আবুবকর লাদান রয়টার্সকে বলেছেন, বিস্ফোরণে নিহতদের বুধবার গণ দাফন করা হয়েছে।

টিএম