দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল অর্থনীতির দেশের তকমা পেয়েছে পাকিস্তান। যে গুরুতর সংকটে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি, ‘অতিমানবিক’ শক্তি ব্যতীত তা থেকে উত্তরণ এখন আর সম্ভব নয়।

বিশ্বের বৃহত্তম ও শীর্ষ দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ইসলাম খবর।

যে কোনো দেশের অর্থনীতির ন্যূনতম ভারসাম্য ধরে রাখতে হলে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে অন্তত ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলারের মজুত থাকতে হয়। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বর্তমানে আছে মাত্র ৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে মাত্র তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

২০২২ সালের জুনের দিকে ভয়াবহ বন্যা হয় পাকিস্তানে। বন্যায় দেশটির বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়, অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতিও হয় বিস্তর। দেশটির অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের তথ্য অনুযায়ী, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে হলে অন্তত ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার প্রয়োজন।

বন্যার সময় পাকিস্তানকে সহায়তা করেছিল তার মিত্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস নিজে পাকিস্তানকে সহয়তা দেওয়ার জন্য দেন-দরবার করেছিলেন। বন্যার সহায়তা বাবদ গত বছর ১ হাজার কোটি ডলারও পেয়েছিল পাকিস্তান। চলতি বছর সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত দেশটিকে দিয়েছে আরও ৪০০ কোটি ডলার।

বন্যা শেষ হয়েছে প্রায় ৬ মাস হতে চলল, এখনও দেশটির অনেক এলাকায় জমে আছে বন্যার পানি। সেই পানি নামানাতে জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ এখনও দেখা যায়নি দেশটির কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে।

উর্বর কৃষিভূমির হিসেবে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশ হওয়া সত্ত্বেও কেবলমাত্র সরকারের উদাসীনতার কারণে বানের পানি জমে থাকায় এখন পর্যন্ত দেশটির অনেক এলাকায় ফের কৃষিকাজ শুরুই করতে পারেননি কৃষকরা।

পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোট সরকারের এখন একমাত্র লক্ষ্য বিদেশি ঋণ নেওয়া। বর্তমানে দেশটিতে ডলারের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ পাকিস্তানি রুপি। তবে পাকিস্তানের একজন কারেন্সি এক্সচেঞ্জ বিশেষজ্ঞ দেশটির জাতীয় দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেছেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পেতে কৃত্রিমভাবে নিজেদের মুদ্রার মান নিম্ন রেখেছে দেশটির সরকার।

এসএমডব্লিউ