আইএমএফের সহায়তা ছাড়া গতি নেই : শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
যে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা, তা থেকে উদ্ধার পেতে হলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহায়তা ছাড়া কোনো আর কোনো পথ নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।
সম্প্রতি রাজধানী কলম্বোতে নিজ কার্যালয়ে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের বৈঠক করেছেন বিক্রমাসিংহে। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের অর্থনীতি যে তছনছ হয়ে গেছে— তা আমরা সবাই জানি…এবং এই কারণে আমাদের সার্বিক পরিস্থিত খুবই কঠিন হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে দেশের বহু মানুষ তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছেন, জীবনযাত্রার ব্যয় অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে; ফলে সাধারণ লোকজন তাদের জীবনধারায় বদল আনতেও বাধ্য হচ্ছেন।’
বিজ্ঞাপন
দেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক খাতগুলেও অর্থনৈতিক সংকটের কশাঘাতে জর্জরিত— উল্লেখ করে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বর্তমানে আমরা যেসব সমস্যা মোকাবিলা করছি— সবই এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ভূত। সংকটের মূল কোথায় কিংবা কোথা থেকে এটি শুরু হলো— এখন এসব আলোচনা মূল্যহীন। আমাদের সামনে একমাত্র উপায় এখন আইএমএফের সহায়তা। যদি তা আমরা না পাই, তাহলে (সংকট থেকে) মুক্তির কোনো উপায় নেই।’
করোনা মহামারি এবং রাজাপাকসে পরিবারের নেতৃত্বাধীন সরকারের উদাসীনতা-অদূরদর্শী নীতির কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করার মতো অর্থও আর নেই দেশটির কোষাগারে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতালাভের পর এত গভীর সংকট দেখেননি দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপদেশটির লোকজন।
বৈঠকে প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশের ধসে পড়া অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ সংক্রান্ত কর্মসূচি পুনর্গঠন করছে সরকার।
‘আমরা বর্তমানে ঋণ পরিশোধ কার্যক্রম পুনর্গঠিত করছি। ইতোমধ্যে জাপান, চীন ও ভারতের সঙ্গে এ সংক্রান্ত আলোচনাও হয়েছে।’
‘কিন্তু এই কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে সামনের বছর থেকে আমাদের রপ্তানি আয় কমে যাবে। এ কারণে এখন আমাদের সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পর্যটন খাতকে ফের পুরোদমে সক্রিয় করা।’
বিক্রমাসিংহে আরও বলেন, আইএমএফের ঋণ পেতে হলে সবার আগে প্রয়োজন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ঋণদাতা সংস্থার আস্থা অর্জন করা। অর্থাৎ, ঋণ দেওয়ার পর তা পরিশোধের নিশ্চতয়তা।
‘আইএমএফের সঙ্গে আমাদের এ পর্যন্ত (ঋণ সংক্রান্ত) যত আলোচনা হয়েছে, আমার বিশ্বাস— আমরা আইএমএফর আস্থা অর্জনে অনেকাংশে সফল হয়েছি।’
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সেই বৈঠকে সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিভিন্ন শ্রমসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসএমডব্লিউ