নেপালে বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার
নেপালে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটির ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা সোমবার ইয়েতি এয়ারলাইন্সের সেই উড়োজাহাজটির ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত বাক্সটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে ৭২ জন আরোহী নিয়ে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট উড়োজাহাজ এটিআর ৭২-৫০০ পোখরা বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টার সময় বিধ্বস্ত হয়। পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা এখন পর্যন্ত ৬৮ জন যাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করতে পেরেছেন। নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব নেপাল-সিএএএন) কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশটির ইতিহাসে গত ৩০ বছরের মধ্যে এত বড় মাত্রার বিমান দুর্ঘটনা রেকর্ড নেই।
বিজ্ঞাপন
ইয়েতি এয়ারলাইন্স ও পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, বিমানবন্দরে অবতরণের মাত্র ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড আগে বিধ্বস্ত হয়েছে উড়োজাহাজটি। ঠিক কী কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও জানা যায়নি; তবে উদ্ধার হওয়া ব্ল্যাকবক্সের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট বিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ক কিছু তথ্য অন্তত পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কাটমান্ডু বিমানবন্দরের কর্মকর্তা টেকনাথ সিতাউলা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ব্ল্যাকবক্সের যাবতীয় তথ্য অক্ষত অবস্থাতেই আছে এবং দ্রুত সেসব তথ্য সরকারি তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠানো হবে।
অত্যন্ত ঠাণ্ডা ও কুয়াশার কারণে উদ্ধার তৎপরতায় গতি আনা যাচ্ছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৬৮ জন যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, তবে দুর্ঘটনার যে ভয়াবহতা— তাতে বাকি ৪ যাত্রীর বেঁচে থাকার আশা খুবই ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারী দলের এক কর্মকর্তা।
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের তথ্য অনুযায়ী, কাটমান্ডু বিমানবন্দর থেকে পোখরার উদ্দেশে রওনা হয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়া উড়োজাহাজটির ৭২ যাত্রীর মধ্যে ৫৭ জন ছিলেন নেপালি, ৫ জন ভারতীয়, ৪ জন রুশ, ২ জন দক্ষিণ কোরীয়। এছাড়া আর্জেন্টিনা, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের ১ জন করে নাগরিক ছিলেন সেই বিমানে যাত্রী হিসেবে।
পোখরার পুলিশ কর্মকর্তা অজয় কে.সি. রয়টার্সকে বলেন, ‘নিখোঁজ চার যাত্রীর সন্ধান পেতে উদ্ধার তৎপরতা এখনও জারি রেখেছি আমরা। তবে আবহাওয়াগত কারণে তৎপরতা চালাতে খুব সমস্যা হচ্ছে। এখানে খুবই ঠান্ডা এবং কুয়াশার কারণে সব অস্পষ্ট। রোববার শুধু ঠান্ডা আর কুয়াশার কারণে রাতের বেলা কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল।’
উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে ৬৩ জনের মৃতদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
পোখারা বিমানবন্দরের এক মুখপাত্রও জানিয়েছেন, ঠান্ডা-কুয়াশা ও মেঘলা আবহওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে গতি আনা যাচ্ছে না। আবহাওয়া পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি ঘটবে বলে আশা করছেন তারা।
এসএমডব্লিউ