বিশ্বজুড়ে যমজ শিশু জন্মের রেকর্ড
আগের তুলনায় বিশ্বে যমজ শিশুর সংখ্যা এতটা বেড়েছে যে, এই সংখ্যাটা যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর প্রায় ১৬ লাখ যমজ শিশু জন্ম নিচ্ছে। জন্ম নেওয়া প্রতি ৪২ নবজাতকের একটি যমজ। এমন তথ্য জানিয়ে গবেষকরা বলছেন, বিশ্ব এখন যমজ শিশুর চূড়ায় পৌঁছেছে। খবর বিবিসি অনলাইনের।
১৯৮০’র দশকের পর থেকে যমজ শিশু জন্ম নেওয়ার হার এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। অনেকের এখন বেশি বয়সে সন্তান জন্ম দেওয়া এবং টেস্টটিউব বেবি বা আইভিএফ পদ্ধতিতে শিশুর জন্ম ছাড়াও অধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সহায়তায় সন্তান ধারণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াকে এর একটি অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘হিউম্যান রিপ্রোডাকশনে’ প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধটির সহ-লেখক ও অক্সফোর্ডের অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান মনডেন বলেন, ‘বিশ্বে যমজ শিশুর সংখ্যা এত বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে যে বিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে এমনটা দেখা যায়নি। যেকোনো সময়ের তুলনায় এ সংখ্যা সর্বোচ্চ।’
১৬৫টি দেশ থেকে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করে এ গবেষণা চালানো হয়। এর সঙ্গে ১৯৮০ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে যমজ শিশুর জন্ম ও অন্যান্য তথ্যের তুলনাত্মক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালের বৈশ্বিক পর্যালোচনা অনুসারে, বিশ্বের সব অঞ্চলে ৩০ বছরের বেশি বয়সীদের যমজ শিশু জন্ম দেওয়ার হার অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ার কারণে বিশ্বে যমজ শিশুর সংখ্যা চূড়ায় পৌঁছেছে। গবেষণায় অন্তর্ভূক্ত সময়ে এশিয়াতে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩২ শতাংশ; উত্তর আমেরিকাতে তা ৭১ শতাংশ।
প্রতি হাজার নবজাতকের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় (যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা) যমজ শিশু জন্মের হার সবচেয়ে বেশি। এছাড়া বিশ্বে প্রতি হাজার নবজাতকে যমজ শিশুর হার ৯ থেকে বেড়ে এখন ১২।
তবে গবেষকেরা জানিয়েছেন, আফ্রিকাতে যমজ শিশুর হার বরাবরের মতো সবচেয়ে বেশি। গত ৩০ বছরে এর কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর পেছনে কাজ করছে আফ্রিকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ও মহাদেশটির সঙ্গে বাকি বিশ্বের ‘জিনগত পার্থক্য’। এই কারণে এ অঞ্চলে যমজ শিশুর জন্ম আগে থেকেই বেশি ছিল।
বর্তমান বিশ্বে জন্ম নেওয়া মোট যমজ শিশুর ৮০ শতাংশই আফ্রিকা ও এশিয়ায়। তবে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে যমজ শিশুর মৃত্যুহার বেশি। বিশেষ করে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে জন্ম নেওয়ার এক বছরের মধ্যে অনেক যমজ শিশুর একটি মারা যায়। প্রতিবছর এ সংখ্যাটা দুই লাখের বেশি বলে জানানো হয়েছে।
এএস