ভারতের উত্তরাখণ্ড প্রদেশের জোশিমঠ শহরে কয়েকটি বাড়িঘর ও একটি মন্দির দেবে যাওয়ার ঘটনায় ওই এলাকায় বেশ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই শহরেই এবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কে দেখা গেল বিরাট ফাটল।

কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে জোশিমঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অবকাঠামো দেবে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে। ডুবন্ত এই শহরের ছয় শতাধিক পরিবারকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় জোশিমঠ-মালারি বর্ডার রোডের একাধিক জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল। জোশিমঠে ক্রমাগত মাটি বসে যাচ্ছে, এর জেরেই ফাটল ধরেছে বলে জানা গেছে। 

এই রাস্তায় ফাটল ধরতেই স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কারণ এই রাস্তা সোজা চলে গিয়েছে ভারত-চীন সীমান্তে। এই রাস্তা যদি কোনোভাবে ধসে যায়, তবে ভারত-চীন সীমান্তের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। দেশটির নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ঝুঁকি তৈরি হবে।

শনিবারই জোশিদমঠের স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, মালারি ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের কাছেই জোশিমঠ-মালারি বর্ডার রোডের বেশ কিছু জায়গায় বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। রাস্তার মাঝে কয়েকটি জায়গায় মাটি ধসেও গিয়েছে। এই রাস্তা ভেঙে গেলে বা ধসে গেলে সাধারণ মানুষ যেমন চরম সমস্যায় পড়বে, তেমনই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও বিপদ দেখা দিতে পারে।

চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিবাদ নতুন নয়। একাধিকবার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে চীনের সেনারা। উত্তরাখণ্ড লাগোয়া ভারত-চীন সীমান্তও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্তে যাতায়াতের সুবিধার জন্যই তৈরি করা হয়েছিল জোশিমঠ-মালারি বর্ডার রোড। এ সড়ক কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভারতীয় সেনারা চূড়ান্ত সমস্যায় পড়বেন। তাদের কাছে অস্ত্রশস্ত্র, রসদ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। তেমনই বিপর্যয়ের সুযোগ নিয়ে চীন যে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

শনিবারই জোশিমঠ পরিদর্শনে যান উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী। তিনি এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গেও দেখা করেন এবং যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দেন। অন্যদিকে, শনিবারই চামোলি জেলা প্রশাসনের তরফেও জোশিমঠের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে রাজ্যে সমস্ত বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজের ওপর স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেছে।

ওএফ