বলছে পাকিস্তানের তদন্ত দল
ইমরান খানের ওপর গুলিবর্ষণ ৪টি জায়গা থেকে, ছিল আরও ৩ শুটার
গত বছরের নভেম্বরে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে হত্যার উদ্দেশে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। মূলত সরকারবিরোধী লংমার্চে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদ শহরে ওই হামলা হয়েছিল।
হামলায় ইমরান খান আহত হন এবং একজন হামলাকারীকে ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এই ঘটনা নিয়ে তদন্তকারী দল বলছে, চারটি জায়গা থেকে ইমরান খানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে এবং সেখানে আরও তিনজন শুটার ছিল।
বিজ্ঞাপন
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত নভেম্বরের শুরুতে পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে হত্যা প্রচেষ্টার ঘটনায় তদন্ত করেছে জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম (জেআইটি)। তদন্তকারী এই দলটি বলেছে, চারটি ভিন্ন জায়গা থেকে (ইমরান খানের ওপর) গুলি চালানো হয়েছিল এবং গ্রেপ্তারকৃত একজন সন্দেহভাজন ছাড়া আরও তিনজন শুটার এই হামলার সাথে জড়িত ছিল।
মঙ্গলবার তদন্তকারী দল জেআইটি-র একজন সদস্যের বরাত দিয়ে দ্য ডন সংবাদপত্র জানিয়েছে, ‘ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা সন্দেহভাজন নাভিদ মেহেরের পরিচালিত বন্দুক হামলা ছাড়াও যথেষ্ট উচ্চতা থেকে অজানা অস্ত্র থেকে ইমরান খানের ওপর গুলি চালিয়েছিল তিনজন অজ্ঞাত বন্দুকধারী।’
জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিমের (জেআইটি) নেতৃত্বে রয়েছেন লাহোরের পুলিশ প্রধান গুলাম মাহমুদ ডোগার। তার নেতৃত্বাধীন জেআইটি জানিয়েছে, প্রতিবাদ সমাবেশের সময় ইমরান খানকে কনটেইনার-মাউন্ট করা ট্রাকে তিনটি গুলি লাগে। হামলায় মোট ১৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।
জেআইটি পিটিআইয়ের সমাবেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ‘কিছু অব্যবস্থাপনা’ চিহ্নিত করেছে।
এর আগে পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওমর সরফরাজ চিমা বলেছিলেন, ইমরান খানের ওপর বন্দুক হামলা ‘সংগঠিত এবং সুচিন্তিত ষড়যন্ত্র’। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া হামলাকারী সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, নাভিদ একজন ‘প্রশিক্ষিত ঘাতক’ এবং সে তার অন্য সহযোগীদের সাথে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ইমরান খানের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত প্রধান সন্দেহভাজন নাভিদ এবং তার চাচাতো ভাই মুহাম্মদ ওয়াকাস জেআইটি হেফাজতে রয়েছে।
এর আগে হামলার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং আইএসআই-এর মেজর জেনারেল ফয়সাল নাসিরকে হত্যার ষড়যন্ত্রের জন্য দায়ী করেছিলেন ৭০ বছর বয়সী ইমরান খান। ঘটনার পর পাঞ্জাব পুলিশ হত্যা প্রচেষ্টার সাথে সম্পর্কিত এফআইআর নথিভুক্ত করলেও এতে হাই প্রোফাইল সন্দেহভাজনদের নাম উল্লেখ করেনি।
তবে ইমরান খান এই এফআইআর প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, শেহবাজ শরিফ, রানা সানাউল্লাহ এবং মেজর ফয়সালের নাম উল্লেখ ছাড়া এটি (এফআইআর) কেবল ‘আবর্জনার টুকরো’।
পাঞ্জাব পুলিশ অবশ্য বলেছে, তারা নাভিদকে অপরাধের স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছে এবং সে তার অপরাধ স্বীকার করেছে। ইমরান খান দাবি করেছিলেন, নাভিদ একজন প্রশিক্ষিত শুটার এবং ঘটনাস্থলে অন্য আরও শুটার ছিল যে অন্য দিক থেকে তার ওপর গুলি চালিয়েছিল।
এছাড়া জেআইটি এখন পর্যন্ত হামলার সময় ইমরান খানের কাছে উপস্থিত থাকা পুলিশ সদস্য এবং পিটিআই কর্মীদের বক্তব্য রেকর্ড করেছে।
অন্যদিকে ইমরান খান তার ক্ষত থেকে সেরে উঠছেন এবং বর্তমানে লাহোরের জামান পার্কে নিজের বাসভবনেই অবস্থান করছেন।
টিএম