নাগরিকদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করছে তাইওয়ান
চীনের সম্ভাব্য হামলা-আগ্রাসন ঠেকাতে নিজ দেশের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের এক বছরের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করছে তাইওয়ান। এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানের সরকার এ সম্পর্কে ঘোষণা না দিলেও শিগগিরই তা দেওয়া হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।
তাইওয়ানের আধা সরকারি সংবাদসংস্থা সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (সিএনএ) বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বায়ত্বশাসিত এই দ্বীপভূখণ্ডের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন এ সম্পর্কিত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন।
বিজ্ঞাপন
সাই ইং-ওয়েনের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষাবাহিনীকে পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করতে সোমবার সরকারের উচ্চপর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে তাইওয়ানের প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের এক বছর বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রস্তাব উঠলে প্রেসিডেন্ট ও উপস্থিত অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা তাতে সম্মতি দেন।
‘বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকেই এ কর্মসূচি শুরু হবে এবং আশা করা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তার ফল পাওয়া শুরু করব আমার। কারণ, ততদিনে একটি ব্যাচের সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে যাবে,’ সিএনএকে বলেন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা।
১৯৪৯ সালে মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে সংঘটিত এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে চীনের তৎকালীন রাজধানী পিকিং দখল করে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। চীনের ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী তখন পিকিং থেকে পালিয়ে তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করে তাইওয়ানে আশ্রয় নেন এবং এ দ্বীপ ভূখণ্ডকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন।
তবে তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী রাজনীতিকরা নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম বলে দাবি করলেও চীন এই দ্বীপ ভূখণ্ডকে এখনও নিজেদের অংশ বলে দাবি করে আসছে শুরু থেকেই; সেই সঙ্গে তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী আন্দোলনকে বরাবর বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা হিসেবেও উল্লেখ করে আসছে বেইজিং।
গত ৭ দশকের নানা সময়ে বেইজিং তাইওয়ানের ওপর চাপ অব্যাহত রাখলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমলে তা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার তাইওয়ানের আকাশ ও জলসীমায় চীনের যুদ্ধযান অনুপ্রবেশের ঘটনাও ঘটেছে।
চীনের এসব তৎপরতাকে ‘উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে বেইজিংয়ের প্রতি কয়েক দফা সতর্কবার্তাও দিয়েছে তাইওয়ান।
৩৬ হাজার ১৯৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপ ভূখণ্ডের রয়েছে নিজস্ব সংবিধান, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতৃত্ব এবং প্রায় ৩ লাখ সক্রিয় সেনা সদস্যের একটি সেনাবাহিনী।
নতুন এই কর্মসূচী শুরু হলে দেশটিতে নিয়মিত সেনাবাহিনীর পাশাপাশি একটি বিশালসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীও গঠিত হবে।
এসএমডব্লিউ