করোনা : চীনের এক শহরেই প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন ৫ লাখ মানুষ
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ শ্যানদংয়ের উপকূলীয় শহর কুইংদাওয়ে প্রতিদিন ৫ লাখেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। শ্যানদংয়ের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এফপি।
শ্যানদং প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে— কুইংদাওয়ে প্রতিদিন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন ৩০ থেকে ৪০ জন। শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ৩১ জন।
বিজ্ঞাপন
তবে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কুইংদাও শাখার মুখপত্র পত্রিকা বিও তাওয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ কেটি মানুষ অধ্যুষিত এই শহরটিতে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন ৪ লাখ ৯০ হাজার থেকে ৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষ। খুব শিগগরিই শহরের সংক্রমণ পরিস্থিতি চুড়ান্ত পর্যায় (পিক) স্পর্শ করবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
শ্যানদংয়ের স্থানীও আরও কয়েকটি পত্রিকাও বিও তাওয়ের এ খবরটি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে।
২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো চীনেও দীর্ঘ লকডাউন, সামাজিক দূরত্ববিধি, বাড়ির বাইরে গেলে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশনসহ কঠোর সব করোনা বিধি জারি করেছিল।
পরের বছর, ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে অধিকাংশ দেশ করোনা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া শুরু করলেও চীন তার আগের অবস্থানে অনড় ছিল চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত। করোনার বিরুদ্ধে চীন সরকারের এই কঠোর অবস্থান পরিচিতি পায় ‘জিরো কোভিড’ নীতি হিসেবে।
কিন্তু আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে কঠোর করোনাবিধির মধ্যে থাকায় অতিষ্ঠ চীনের সাধারণ জনগণ গত নভেম্বরের শেষদিকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। জনগণের এই বিক্ষোভের পর চলতি ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে আসে দেশটির সরকার।
তার পর থেকেই দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন, হাসপাতালগুলো করোনা রোগীদের ভিড়ে উপচে পড়ছে এবং অনেক ওষুধের দোকানে করোনার ওষুধের যোগান শেষ হয়ে গেছে।
চীনে অবশ্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ব্যাপার ব্যাপকভাবে সংকুচিত। সরকারি সংবাদমাধ্যমের বাইরে অন্যান্য পত্রিকা, বেতার ও নিউজ চ্যানেলকে ব্যাপক বিধিনিষেধ মেনে সংবাদ প্রকাশ করতে হয়ে।
দেশের করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সব পত্রিকা সরকারের দেওয়া তথ্যই প্রকাশ করছে। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে অবশ্য দেশের হাসপাতালগুলোর রোগীদের ভিড়, ফার্মেসিতে ওষুধের সংকট নিয়েও প্রতিবেদন করেছে, তবে সেসব প্রতিবেদনের সংখ্যা খুব কম।
এসএমডব্লিউ