চাঁদে গবেষণাকেন্দ্র নির্মাণ করছে চীন রাশিয়া
পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদে যৌথ গবেষণাকেন্দ্র নির্মাণ করছে বিশ্বের অন্যতম বড় দুই পরাশক্তি চীন ও রাশিয়া। এ লক্ষ্যে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে দেশ দু’টি। মহাকাশে নিজেদের উপস্থিতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে রুশ মহাকাশ সংস্থা রসকসমস জানিয়েছে, চাঁদের ভূখণ্ডে বা কক্ষপথে অথবা উভয়স্থানেই গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে চীনের ন্যাশনাল স্পেস অ্যামিনিস্ট্রেশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা। এছাড়া উভয় দেশের মহাকাশ সংস্থা থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দুই দেশ একে অপরের প্রয়োজনে পাশে পাবে।
বিজ্ঞাপন
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশযান উৎক্ষেপণের ৬০ বছরপূর্তি উদযাপনের বিষয়ে রাশিয়ার প্রস্তুতির মধ্যেই উভয় দেশের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা সামনে এলো।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, দুই দেশ মিলে চাঁদে একটি বৈজ্ঞানিক কেন্দ্র তৈরি করবে। সেখানে চাঁদের মাটিতে ও তার কক্ষপথে জটিল গবেষণা করার অবকাঠামো থাকবে।
উভয় দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশ একসঙ্গে মিলে পুরো পরিকল্পনা করেছে এবং তার রূপায়ণও একসঙ্গে হবে। রুশ সংবাদসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, চীনের রাষ্ট্রদূতও জানিয়েছেন, দুই দেশ চাঁদে কেন্দ্র স্থাপন করতে চলেছে।
২০২০ সালের জুলাই মাসে রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধান দিমিত্রি রগোজিন বলেছিলেন, তার দেশ ও চীন একসঙ্গে চাঁদে গবেষণা করতে চায়। সে জন্যই চাঁদে একটি মহাকাশকেন্দ্র তৈরি করতে চান তারা। তিনি জানিয়েছিলেন, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে চীন সম্প্রতি খুবই উন্নতি করেছে। তাই তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চললে রাশিয়া লাভবান হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ থেকেই রাশিয়া ও চীন একে অপরের কাছাকাছি এসেছে। সে সময় রাশিয়ার ইউক্রেন দখল করে নেওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক খারাপ হওয়া শুরু হয়। চীনের সঙ্গেও নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছেই। তারপরই চীন ও রাশিয়া নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। জাতিসংঘেও অনেক সময়ই তাদের এই সুসম্পর্ক নজরে এসেছে।
ফ্রান্স এখন মহাকাশ নিয়ে সামরিক মহড়া শুরু করেছে। দেশটিকে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। ফলে মহাকাশ নিয়েও উন্নত ও পরাশক্তি দেশগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে চাঁদে চীন ও রাশিয়ার যৌথ মহাকাশকেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
সূত্র: বিবিসি, ডয়চে ভেলে
টিএম