বিশ্বের সাবেক শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানি টুইটারের জন্য নতুন শীর্ষ নির্বাহী (সিইও) খুঁজছেন। রোববার এ সংক্রান্ত একটি টুইটবার্তাও দিয়েছেন তিনি।

রোববার এক টুইটবার্তায় মাস্ক বলেন, ‘(টুইটারের জন্য) নতুন কোনো শীর্ষ নির্বাহীকে নিয়োগ দেওয়া আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি আসলে এমন একজন শীর্ষ নির্বাহী চাইছি, যিনি টুইটারকে সজীব ও  প্রাণবন্ত রাখতে পারবেন।’

গত ১৮ ডিসেম্বর টুইটারের সিইও পদে তার থাকা উচিত কিনা জানতে চেয়ে এক অনলাইন ভোটের ডাক দেন মাস্ক। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেখানে ভোট দিয়েছেন ১ কোটি ২৭ লাখেরও বেশি মানুষ।

এই ভোটারদের ৫৭ শতাংশই জানিয়েছেন, টুইটারের শীর্ষ নির্বাহী পদে তারা মাস্ককে দেখতে চান না।

অবশ্য টুইটারের একাধিক সূত্র মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে নিশ্চিত করেছে, অনলাইন ভোটের আহ্বান জানানোর আগে থেকেই নতুন সিইও খোঁজার কাজ শুরু করেছেন এই মার্কিন ধনকুবের।

গত নভেম্বরে আদালতে মার্কিন এই ধনকুবের বলেছিলেন, তিনি টুইটারে কম সময় দিতে আগ্রহী এবং এই কোম্পানির সার্বক্ষনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নতুন একজন শীর্ষ নির্বাহী তিনি নিয়োগ দিতে চাইছেন।

প্রায় ছয় মাস নানা নাটকীয়তার পর গত ২৮ অক্টোবর টুইটারের মালিকানা গ্রহণ বিশ্বের সাবেক শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। সে সময় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরমটির কর্মীসংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৫০০ জন।

মালিকানা নেওয়ার পরপরই টুইটারের সিইও পরাগ আগারওয়ালকে চাকরি থেকে অব্যহতি দেন মাস্ক। তারপর শুরু করেন গণছাঁটাই। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে টুইটারের ৫০ শতাংশ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেন তিনি।

কোনো প্রকার পূর্ব নোটিশ না দিয়ে এই গণছাঁটাইয়ের জন্য ইতোমধ্যে টুইটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন চাকরিচ্যুত কর্মীরা।

এছাড়া টুইটারের কর্মীদের নির্ধারিত সময়ের বাইরেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগও উঠেছে মাস্কের বিরুদ্ধে।

অবশ্য ইলন মাস্কের ভাষ্য, কোম্পানি টানা লোকসানের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল; এবং এই লোকসান থেকে টুইটারকে উদ্ধারে গণছাঁটাই ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না।

তবে তার এই সাফাইয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি বিভিন্ন প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক মহল। ইউরোপ মহাদেশভুক্ত দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইতোমধ্যে মাস্কের বিরুদ্ধে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সংবাদকর্মীদের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছে। মাস্ক যদি টুইটারে তার যথেচ্ছাচার বন্ধ না করেন, তাহলে ইউরোপে তাকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছে ইইউ।

মহাকাশযানের যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য উপকরণ প্রস্তুতকারী কোম্পানি স্পেস এক্সের মালিকও মাস্ক এবং মার্কিন সরকারের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে স্পেসএক্সের বাণিজ্যিক চুক্তিও আছে।

মার্কিনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনবিসির এক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি মাসের প্রথম দিকে নাসা থেকে মাস্কের উদ্দেশে একটি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সেই বার্তায় বলা হয়েছে— টুইটারে ‘ধ্বংসযজ্ঞ’ বন্ধ না করলে স্পেসএক্সের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পথে হাঁটবে নাসা।

এসএমডব্লিউ