ফাইল ছবি

আগ্রার তাজমহল। কেবল এই নামটির সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে একখণ্ড ইতিহাস আর অগণিত মানুষের ভালবাসা। বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি এই স্থাপনা একবার দেখতে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক ভারত ভ্রমণ করে থাকেন।

আর এই স্থাপনাতেই কিনা দেওয়া হয়েছে সম্পত্তি কর ও পানির বিল পরিশোধের নোটিশ। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটির ৩৭০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার এই ধরনের কোনও নোটিশ দেওয়া হলো। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাজমহলের ৩৭০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সম্পত্তি কর এবং পানির বিল পরিশোধের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) কর্মকর্তারা এটিকে ভুল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলছেন, শিগগিরই এই ভুলের প্রতিকার করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এনডিটিভি বলছে, যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন উত্তর প্রদেশ সরকারের বিভিন্ন ইউনিটের বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য তাজমহল এবং আগ্রা ফোর্ট উভয়কেই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে কেবল তাজমহলের জন্যই ‘বকেয়া’ হিসাবে ১ কোটি রুপিরও বেশি অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।

এ পর্যন্ত তিনটি নোটিশ পাওয়া গেছে, এর মধ্যে দু’টি তাজমহলের জন্য এবং একটি আগ্রা ফোর্টের জন্য। আগ্রায় এএসআইয়ের সুপারিনটেনডিং প্রত্নতত্ত্ববিদ রাজ কুমার প্যাটেল এনডিটিভিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ড. প্যাটেল এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘তাজমহলের জন্য আমরা দু’টি নোটিশ পেয়েছি, যার একটি সম্পত্তি করের জন্য এবং অন্যটি পানি সরবরাহ বিভাগ থেকে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কাছ থেকে মোট ১ কোটি রুপিরও বেশি অর্থ দাবি করা হয়েছে।’

তিনি বলছেন, এটি অবশ্যই ভুল কারণ এই ধরনের স্মৃতিস্তম্ভ ও স্থাপনাগুলোর জন্য কর প্রযোজ্য নয়।

ড. প্যাটেল বলেন, ‘প্রথমত, সম্পত্তি কর বা গৃহ কর স্মৃতিস্তম্ভ বা এ সংক্রান্ত স্থাপনায় প্রযোজ্য নয়। উত্তরপ্রদেশের আইনেও এই বিধান রয়েছে এবং অন্যান্য রাজ্যেও রয়েছে। পানির বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে বলব, অতীতে এমন কোনও দাবি করা হয়নি এবং আমাদের কাছে এমন কোনও পানির সংযোগ নেই যা আমরা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করি। এছাড়া তাজ কমপ্লেক্সের ভেতরে আমরা যে লনগুলো চালু রেখেছি তা জনসাধারণের সেবার জন্য এবং বকেয়া দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।’

অন্যদিকে আগ্রা ফোর্ট মুঘল সম্রাট আকবর দ্য গ্রেটের নির্মিত ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। ১৬৩৮ সাল পর্যন্ত এই স্থাপনাটি মুঘল রাজবংশের সম্রাটদের প্রধান বাসস্থান ছিল। পরে মুঘল ভারতের রাজধানী আগ্রা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়।

এএসআই কর্মকর্তাদের মতে, এই ঐতিহাসিক স্মৃতি স্থাপনাটি পাঁচ কোটি রুপি কর পরিশোধের নোটিশ পেয়েছে।

এদিকে আগ্রার একজন সিনিয়র মিউনিসিপ্যাল ​​অফিসারকে উদ্ধৃত করে টাইমস অব ইন্ডিয়া বলেছে, কীভাবে এসব নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে তা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, একটি বেসরকারি কোম্পানি সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে নোটিশ প্রক্রিয়ার কাজ করে থাকে।

টিএম