চীনে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করল ভারত
নিজেদের তৈরি দূরপাল্লার পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি ৫—এর সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার উপকূলবর্তী আবদুল কালাম দ্বীপে বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে অগ্নি ৫। এই উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
৫ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার মতো ক্ষমতা আছে নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্রটি । সে হিসেবে চীনের মূল ভূখণ্ডেও আঘাত হানতে সক্ষম অগ্নি ৫।
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচলের ভারত-চীন সীমান্তে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের ব্যাপারটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজনাথ সিং স্বীকার করে নেওয়ার দুই দিনের মাথায় পরীক্ষামূলকভাবে অগ্নি ৫ উৎক্ষেপণ করল ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
গত ৯ ডিসেম্বর ভারতের অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কাছে ভারত ও চীনের সীমান্তরক্ষী ও সেনাসদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে উভয় পক্ষের কয়েকজন সেনা সদস্যের মৃত্যুও ঘটেছে। তবে দুই দেশের সংবাদমাধ্যমে এই খবর এসেছে গত ১২ ডিসেম্বর।
বুধবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, ভারত-চীন সীমান্তের পরিস্থিতি মোটাদাগে স্থিতিশীল আছে।
ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, গত মাসে উত্তরাখণ্ডে ভারত ও মার্কিন বাহিনীর যৌথ সামরিক মহড়া অরুণাচলে সাম্প্রতিক এই সংঘাতের উসকানি হিসেবে কাজ করেছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে সীমান্ত আছে চীনের।
হিমালয় পর্বতঘেঁষা অরুনাচল নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে গত বেশ কয়েক দশক ধরে। এই দ্বন্দ্বের প্রধান কারণ— অরুণাচলকে চীন বরাবরই নিজেদের স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ তিব্বতের অংশ মনে করে। ১৯৬২ সালে এই ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে এক ব্যাপক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধও হয়েছে।
অবশ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এনডিটিভিকে বলেছেন, অগ্নি ৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের সময়সূচি নির্ধারিত হয়েছিল অনেক আগেই। অরুণাচলের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সঙ্গে এটির কোনো সম্পর্ক নেই।
২০১২ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শুরু করে আসছে ভারত। অগ্নি ৫ ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর তৈরি নবম ক্ষেপণাস্ত্র।