ফুসফুস ক্যানসারের মুখে খাওয়ার ওষুধের অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র
ফুসফুসের ক্যানসারে ভোগা রোগীদের জন্য মার্কিন কোম্পানি মিরাতি থেরাপিটিক্সের ওষুধ অ্যাডাগ্রাসিবের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউএস ফুডস অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। মঙ্গলবার এই অনুমোদন দিয়েছে এফডিএ।
ফুসফুসের ক্যানসারের জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রাস নামের একটি জিন দায়ী। মানব দেহের ফুসফুসের কোষগুলোতে এই জিনের অস্তিত্ব দেখা যায় এবং ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ফুসফুসে এই জিন মাত্রাতিরিক্তি হারে বাড়তে থাকে। ফলে কোষের অন্যান্য উপাদান ও জিন ধ্বংস হতে থাকে এবং এক সময় রোগী মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়।
বিজ্ঞাপন
অন্যান্য ক্যানসার রোগীদের মতো ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্তরাও রোগের তিনটি স্তর পার করেন— প্রাথমিক, গুরুতর এবং অন্তিম। এফডিএর বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিরাতি থেরাপিটিক্সের এই ওষুধটি ফুসফুস ক্যানসারের প্রাথমিক ও গুরুতর পর্যায়ের রোগীদের সুস্থতার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
‘এফডিএর এ সংক্রান্ত পরীক্ষায় অ্যাডাগ্রাসিব বেশ সফলভাবেই উত্তীর্ণ হয়েছে,’ রয়টার্সকে বলেন এফডিএর এক কর্মকর্তা।
মিরাতির শীর্ষ নির্বাহী ডেভিড মিক বলেছেন, এখন থেকে ‘ক্রাজাতি’ নামে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধের বাজারে নিয়মিতই পাওয়া যাবে এই ওষুধটি। খুচরা বাজারে ২০০ মিলিগ্রাম ওজনের ১৮০টি ট্যাবলেটের প্রতিটি বোতলের দাম পড়বে ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬৭ টাকা (১৯ হাজার ৭৫০ ডলার)।
তিনি আরও জানান, এফডিএর অনুমোদনের জন্য আবেদনের আগে একাধিক এই ওষুধটির একাধিক মেডিকেল ট্রায়াল পরিচালনা করেছে মিরাতি থেরাপিটিক্স। সেসব ট্রায়ালের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রাথমিক স্তরের ফুসফুস ক্যানসার রোগীদের শতভাগ এবং গুরুতর পর্যায়ের রোগীদের ৪৩ ভাগ অ্যাডাগ্রাসিব বা ক্রাজাতি সেবনের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে মিরাতি থেরাপিটিক্সের শেয়ারের দাম ৫৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল; কিন্তু এফডিএর অনুমোদন পাওয়ার পর মঙ্গলবারই কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৮ শতাংশ।
অবশ্য ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের জন্য অ্যাডাগ্রাসিব বা ক্রাজাতিই যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ওষুধ— তা নয়। গত বছর অ্যামজেন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি মার্কিন কোম্পানির ওষুধ লুমাক্রাসের অনুমোদন দিয়েছে এফডিএ। সেই হিসেবে ফুসফুসের ক্যানসারের প্রথম মুখে খাওয়ার ওষুধ এই লুমাক্রাস।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লুমাক্রাস বিক্রি করে মোট সাড়ে ৭ কোটি ডলার আয় করেছে অ্যামজেন ইন্টারন্যাশনাল।
এসএমডব্লিউ