ভারত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়ার বর্ষপূর্তিতে পাকিস্তানের করাচিতে ‘কাশ্মির শোষণ দিবস’ পালন করছেন এক ব্যক্তি। ছবিটি ২০২০ সালের ৫ আগস্ট তোলা

কাশ্মির নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। বৈশ্বিক নানা উদ্যোগে এই সংকট নিরসনের চেষ্টা করা হলেও তা এখনও উভয় দেশের মধ্যে জিইয়ে রয়েছে এবং নানা সময়ে উত্তেজনাও দেখা দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান-শাসিত আজাদ কাশ্মির সফর করেছেন ইসলামি দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) প্রধান। এরপরই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।

তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এর মহাসচিব হোসেন ব্রাহিম ত্বহা একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে গত রোববার পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মির সফর করেন।

এসময় ওআইসি-তে তুরস্কের স্থায়ী প্রতিনিধি মেহমেত মেতিন একারসহ সৌদি আরব, আজারবাইজান এবং নাইজারের স্থায়ী প্রতিনিধিরাও মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন। তারা একইসঙ্গে ‘ওআইসি কন্টাক্ট গ্রুপ অন কাশ্মির’-এরও সদস্য।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, সফরকারি ওআইসি মহাসচিব পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মিরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে পৌঁছানোর পর সেখানকার জম্মু ও কাশ্মির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রতিনিধিদলটি কাশ্মিরের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করা লোকদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানায় এবং সূরা ‘ফাতেহা’ পাঠ করেন।

পরে প্রতিনিধি দলটি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা পরিদর্শন করে। এছাড়া প্রতিনিধি দলটি কাশ্মিরি অভিবাসী ও সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় করে।

পরে রাজধানী ইসলামাবাদে পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মিরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ওআইসি মহাসচিব ত্বহা বলেন, দীর্ঘকাল ধরে চলমান এই বিরোধের সমাধান আঞ্চলিক শান্তির জন্য এবং দুই প্রতিবেশীর কল্যাণের স্বার্থেই গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া কাশ্মির সংকটের সমাধান জেদ্দাভিত্তিক সংস্থা ওআইসির অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অন্যদিকে তুরস্কের স্থায়ী প্রতিনিধি তার বক্তব্যে বলেন, সমস্ত মুসলিম দেশ কাশ্মির বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। এছাড়া কাশ্মির ইস্যুতে আঙ্কারা সর্বদা ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বলেও জানান তিনি।

এরপর মঙ্গলবার ওআইসি সেক্রেটারি জেনারেলের পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মিরে সফরের এবং জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে তার মন্তব্যের জন্য নিন্দা জানায় ভারত। দেশটির দাবি, এই অঞ্চল সম্পর্কিত বিষয়ে সংগঠনটির কোনও অবস্থান থাকতে পারে না।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘ওআইসি এবং এর মহাসচিবের ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং এ সংক্রান্ত যে কোনও প্রচেষ্টা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।’

তার দাবি, কাশ্মির ইস্যুতে ‘স্পষ্টভাবে সাম্প্রদায়িক, পক্ষপাতদুষ্ট এবং বাস্তবে ভুল পদ্ধতি’ গ্রহণ করে ওআইসি ইতোমধ্যেই তার ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ হারিয়েছে।

উল্লেখ্য, ওআইসি প্রতিনিধি দলটি গত ১০-১২ ডিসেম্বর ইসলামাবাদ ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মিরে তিন দিনের সফর করেন।

টিএম