ইউক্রেনজুড়ে বাড়ছে রাশিয়ার হামলা। ইউক্রেনীয় জেনারেল স্টাফ বলেছেন, রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র, গোলা এবং ড্রোন পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।

এই পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশগুলো ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষার ওপর বাড়তি নজর দিয়ে কিয়েভের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বিধ্বংসী আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আধুনিক ট্যাংক, কামান এবং দূরপাল্লার অস্ত্রের জন্য আবেদন করার পরে গ্রুপ অব সেভেন বা জি-৭ ‘ইউক্রেনের জরুরি প্রয়োজনীয়তা পূরণের’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এছাড়া ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে জড়ো হওয়া জি-৭ নেতাদের ইউক্রেনে শান্তি নিশ্চিতের জন্য বিশেষ গ্লোবাল পিস সামিট আহ্বানের বিষয়ে নিজের ধারণাকে সমর্থন করতেও আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

রয়টার্স বলছে, জেলেনস্কির পরিকল্পিত ওই শীর্ষ বৈঠকটি কিয়েভের ১০-দফা শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপর জোর দেবে। যেখানে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সকল সৈন্য প্রত্যাহার এবং কিয়েভের পক্ষ থেকে কোনও আঞ্চলিক ছাড় না দেওয়ার ওপর জোর দেওয়ার মতো দাবিও রয়েছে।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস সোমবার বলেছেন, রাশিয়া যদি বেসামরিক এলাকাকে লক্ষ্যবস্তু করে তাহলে এসব অবকাঠামোতে আঘাতকারী রুশ ড্রোনগুলোর লঞ্চ সাইটকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার বিষয়ে তিনি ‘রাজি’ থাকবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত রোববার জেলেনস্কিকে বলেন, ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা বাড়ানোই এখন ওয়াশিংটনের অগ্রাধিকার।

অবশ্য মস্কো বরাবরই বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করার কথা অস্বীকার করেছে। কিন্তু ইউক্রেনের এই যুদ্ধে লক্ষাধিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং এমন হাজারও মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন যারা যোদ্ধা ছিলেন না।

নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান জ্যান এগল্যান্ড বলেছেন, ‘বসবাসের অযোগ্য অবস্থার’ কারণে শীতকালে ইউরোপে কয়েক হাজার ইউক্রেনীয় শরণার্থীর আরেকটি ঢেউ নামতে পারে।

পৃথক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, রাশিয়ার ধ্বংসাত্মক আক্রমণের বিরুদ্ধে আধুনিক ট্যাংক, আর্টিলারি ফায়ারপাওয়ার এবং দূরপাল্লার অস্ত্রের জন্য ভলোদিমির জেলেনস্কির আবেদনের পর সোমবার ‘ইউক্রেনের জরুরি প্রয়োজনীয়তা পূরণের’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জি-৭।

এছাড়া ভয়াবহ জ্বালানি ঘাটতির কারণে ইউক্রেনকে অতিরিক্ত ২ বিলিয়ন ঘনমিটার প্রাকৃতিক গ্যাস পেতে সহায়তা করার জন্যও জি-৭কে অনুরোধ করেছেন জেলেনস্কি। কারণ জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার আবারও বিমান হামলার পরে কয়েক লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ঠান্ডায় মধ্যে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।

অন্যদিকে পৃথকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সোমবার ইউক্রেনের সামরিক সহায়তার জন্য ব্যবহৃত তহবিলে আরও ২ বিলিয়ন ইউরো প্রদানের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

টিএম