বাবরি মসজিদ ধ্বংসের তিন দশক পার হয়ে গেছে। আগের মতো এই এলাকায় আর উত্তেজনা নেই। অন্য সব দিনের মতোই তীর্থযাত্রীরা এই শহরে আসা-যাওয়া করবে। তবুও যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে পুলিশ অযোধ্যার নিরাপত্তা বাড়িয়েছে।

৩০ বছর আগে এই দিনেই অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর ‘কর সেবক’রা ধ্বংস করে দিয়েছিল ১৬শতকের তৈরি বাবরি মসজিদ। তবে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকী উপলক্ষে বেশকিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষই সেগুলো নিয়ে বেশি উৎসাহী নয়। আগে এই বিশেষ দিনটিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ‘শৌর্য দিবস’ পালন করত। আর মুসলিম সম্প্রদায় ‘কালা দিবস’ পালন করত। কিন্তু এখন আর সেগুলো পালন করা হয় না।

২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মাধ্যমে রাম জন্মভূমি বিরোধের অবসান ঘটার পর উভয় সম্প্রদায় এখন এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী। স্থানীয় ব্যবসায়ী নিমিত পাণ্ডে জানান, অযোধ্যার পরিস্থিতি এখন বদল গেছে। এলাকার মানুষ শান্তি চাইছে। আগে ৬ ডিসেম্বর প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হতো কিন্তু এখন আর তা হয় না। গত কয়েক বছর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকীকে সামনে রেখে অযোধ্যাকে দুর্গে পরিণত করা হতো। যদিও এবারের চিত্র অনেকটাই আলাদা।

অযোধ্যার পুলিশ জানিয়েছে, অযোধ্যার পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। তবে এই দিনের জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অযোধ্যায় আটটি প্রধান প্রবেশ পথ রয়েছে। সেগুলোতে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাম মন্দির কমপ্লেক্সের আশেপাশে পুলিশদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পিটিআইকে পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, অন্যান্য দিনও এই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকে।

আগেই ভারতের সুপ্রিম কোর্টের অধীনে দুটি সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা করে দুটি ধর্মীয় স্থান তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্রের সেক্রেটারি চম্পত রাই বলেন, বিশাল রাম মন্দির নির্মাণের দায়িত্ব রয়েছে তাদের ওপর। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এই মন্দির ভক্তদের খুলে দেওয়া হবে।

ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের সেক্রেটারি আতহার হুসেন জানান, তারা পাঁচ একর জমির ওপর একটি মসজিদ নির্মাণ করছেন। এটি ২০২৩ সালের মধ্যে প্রস্তুত হবে।

তবে তিন দশক আগের অযোধ্যা এখন আর নেই বলে দাবি করেন কৃষ্ণ কুমার নামে এক ছোট ব্যবসায়ী। অযোধ্যাবাসী এখন মন্দির মসজিদের থেকে নিজেদের নিয়েই বেশি ব্যস্ত।

এসএসএইচ