ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় এক ফিলিস্তিনির দিকে অস্ত্র তাক করে আছে ইসরায়েলি সৈনিক। ছবিটি গত ১৯ নভেম্বর তোলা

নিজেদের তিন সেনাকে আটক করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ‘প্রতিশোধ নিতে’ ফিলিস্তিনিদের ওপর বোমা নিক্ষেপ করায় সোমবার (২৮ নভেম্বর) তাদের আটক করা হয়। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে এক ইসরায়েলি কিশোরের মৃতদেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে পশ্চিম তীরের শহর বেথলেহেমের কাছে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইম্প্রোভাইজড বোমা নিক্ষেপ করার অভিযোগে ওই তিন সেনাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

রয়টার্স বলছে, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতার তীব্রতা অনেকটাই বেড়েছে। এর মধ্যে গত বুধবার ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীরা পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের একটি হাসপাতাল থেকে এক ইসরায়েলি কিশোরের মৃতদেহ তুলে নিয়ে যায়।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, মৃত ওই কিশোর ইসরায়েলি ড্রুজ হাই-স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল এবং গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রয়টার্স বলছে, এই ঘটনায় আশঙ্কা সৃষ্টি হয় যে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হয়তো কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য হামলা চালাতে পারে। কিন্তু এক কূটনীতিকের দেওয়া তথ্যে বলা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘ জড়িয়ে যায় এবং আলোচনার মাধ্যমে প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর ওই কিশোরের মরদেহ শান্তভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

অবশ্য কিশোরের মৃতদেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার পেছনে বন্দুকধারীরা তাদের উদ্দেশ্য ঘোষণা করেনি। কিন্তু ওই ঘটনার ফিলিস্তিনিরা জেনিনে একই দিনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। মূলত নিজেদের আত্মীয়দের দেহাবশেষের মুক্তির দাবিতে ফিলিস্তিনিরা এই বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি, ইসরায়েল তাদের আত্মীয়দের দেহাবশেষ আটকে রেখেছে।

মূলত ড্রুজ হলো ইসরায়েলের একটি আরব সম্প্রদায়। এই গোষ্ঠীর সদস্যরা ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা সোমবার বেথলেহেমের কাছে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি ড্রুজ সৈন্যদের হামলার তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই ঘটনায় আরও বিস্তারিত কোনও তথ্য তারা জানায়নি।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ বলেছেন, প্রতিশোধের জন্য এই কাজ (ফিলিস্তিনিদের ওপর বোমা নিক্ষেপ) করা হয়েছিল বলে যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে এটি একটি ‘গুরুতর ঘটনা যার জবাবদিহিতা প্রয়োজন’।

টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বেনি গ্যান্টজ আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সৈন্যরা আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয় না এবং প্রতিশোধ নেয় না।’

টিএম