ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প : ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা বহু
এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় জাভা প্রদেশে আঘাত হেনেছে ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্প। সোমবারের এ কম্পনে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ধসে পড়েছে অসংখ্য বাড়ি-ঘর।
শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে ধসে পড়া এসব স্কুল, বাড়ি-ঘর ও অন্যান্য স্থাপনার ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকে আছেন। এতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই স্কুল শিক্ষার্থী ও শিশু।
বিজ্ঞাপন
ইন্দোনেশিয়ার সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২১ মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জাভা। ওই সময় চলছিল স্কুলের পাঠদান। কম্পনে স্কুলগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েন। এখন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল পশ্চিম জাভার পাহাড়ী এলাকা সিয়ানজুর। এটি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ। ভূমিকম্পে এত মানুষ আহত হয়েছেন যে, সিয়ানজুরের হাসাপাতালের গাড়ি পার্কের স্থান, বেজমেন্টে মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। অন্যদিকে টর্চের আলোতে আহতদের কাটা-ছেঁড়া সেলাই করতে দেখা যায় চিকিৎসকদের।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কুকু নামে ৪৮ বছর বয়সী এক নারী হাসপাতাল থেকে বলেন, ‘আমার নিচের সবকিছু ধসে পড়ে। বাচ্চাদের নিচে আমি চাপা পড়েছিলাম।’
কুকু রয়টার্সকে আরও জানান, ধ্বংসস্তুপ থেকে নিজের দুই সন্তানকে বের করে নিয়ে আসতে সমর্থ হন তিনি। এরপর তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু তার এক সন্তান এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার পুলিশের একজন মুখপাত্রের বরাতে বার্তাসংস্থা অন্তরা নিউজ জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে ঘটনাস্থলে কয়েকশ পুলিশ সদস্যকে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে উদ্ধার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের।
পশ্চিম জাভার গভর্নর রিদওয়ান কামিল জানান, সোমবারের ভূমিকম্পে ১৬২ জন নিহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন তারা। তিনি আরও জানান, দুর্গম কিছু এলাকায় মানুষ এখনো আটকে আছেন। এতে মৃতের সংখ্যা বাড়বে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আহত ও মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এ বিষয়টি মাথায় রেখেই তারা কাজ করছেন।
ভূমিকম্পের প্রভাবে কিছু কিছু জায়গায় ভূমিধসও হয়েছে। ভূমিধসের কারণে কিউজেনাং নামে একটি অঞ্চল পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেখানে উদ্ধারকারীরা যেতে পারছেন না। বিদ্যুৎ বিভ্রাটেও উদ্ধারকাজ ব্যহত হচ্ছে।
এদিকে বড় ভূমিকম্প আঘাত হানার পর অন্তত আরও ৮০ বার ছোট ছোট কম্পনে (আফ্টারশক) কেঁপে ওঠে জাভা। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই এরকম কম্পন অনুভূত হয়।
সূত্র: আল জাজিরা
এমটিআই