চিকিৎসা করাতে এসে ২টি কিডনিই চুরি, চিকিৎসকের কিডনি চাইলেন রোগী
চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক নারী রোগী। তবে চিকিৎসা তো হয়ইনি বরং হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে গেছে নিজের দু’টি কিডনিই। এ ঘটনায় সৃষ্টি হয় তোলপাড়। পরে অভিযুক্ত চিকিৎসকের কিডনি চেয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে। বুধবার (১৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টাইমস।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসা করতে গিয়ে কিডনি চুরি হয়ে যাওয়া ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম সুনীতা দেবী। তিনি বিহারের মুজাফফরপুরের বাসিন্দা। সম্প্রতি সেখানকারই একটি স্থানীয় হাসপাতালে কিডনি চুরির এই ঘটনা ঘটে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, জরায়ুর অস্ত্রোপচার করানোর জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বিহারের মুজাফফরপুরের বাসিন্দা সুনীতা দেবী। ৩৮ বছর বয়সী এই নারীর অভিযোগ, অস্ত্রোপচার করে জরায়ু বাদ দেওয়া দূরে থাক, রোগীর দু’টি কিডনিকেই বাদ দিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সেই কিডনিজোড়া কোথায়, তা জানেন না খোদ রোগী এবং রোগীর স্বজনরাই!
মুজাফফরপুর জেলার বেরিয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা সুনীতা দেবী গত ৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অস্ত্রোপচারের পরই সুনীতার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়। পরে দ্রুত তাকে শ্রীকৃষ্ণ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়।
সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, সুনীতার দু’টি কিডনির একটিও নেই। চিকিৎসা হিসেবে ডায়ালিসিস করানোর জন্য তাকে পাটনা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
রোগীর পরিবার এরপরই ওই বেসরকারি হাসপাতাল এবং তার মালিক পবন কুমারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তারা পুলিশের কাছে অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করার দাবি জানান। একইসঙ্গে শাস্তিস্বরূপ অভিযুক্ত চিকিৎসকের দু’টি কিডনি ভুক্তভোগী রোগীকে দেওয়ার দাবি জানান।
সংবাদমাধ্যম বলছে, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ওই বেসরকারি হাসপাতালটি অবৈধ ভাবে পরিচালনা করা হচ্ছিল। অভিযুক্ত চিকিৎসকের যাবতীয় সনদও জাল বলে প্রমাণিত হয়। পরে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া হাসপাতালটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পাটনা মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে বার্তাসংস্থা পিটিআইকে জানানো হয়েছে, সুনীতার শারীরিক অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তার নিয়মিত ডায়ালিসিস চলছে। কোনও ব্যক্তি কিডনি দান করতে ইচ্ছুক হলে, তা সুনীতার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে ইন্ডিয়া টাইমস জানিয়েছে, সুনীতা দেবীকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (আইজিআইএমএস)-এ নাম নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছে। তবে সেটি তখনই করা হবে যখন কিডনি পাওয়া যাবে।
তবে ভুক্তভোগী সুনীতা দেবী পুলিশের কাছে অভিযুক্ত ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করার এবং তার কিডনি নিয়ে তাকে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সুনীতা বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি, অভিযুক্ত যে ডাক্তার আমার দু’টি কিডনি অপসারণ করেছেন তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করুন। আর কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তার (চিকিৎসক) কিডনি আমাকে দেওয়া উচিত যাতে আমি বেঁচে থাকতে পারি।’
টিএম