টানা আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (ফাইল ছবি)

একটানা সাড়ে আট মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ এই সময়ে ইউক্রেনে সাধারণ মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি রুশ সামরিক বাহিনীতে হতাহতের খবরও বিভিন্ন সময় সামনে এসেছে। যদিও রাশিয়া খুব কম সময়ই নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে থাকে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ জেনারেল বলছেন, ইউক্রেনে হতাহত রুশ সেনার সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে গিয়ে এক লাখেরও বেশি রুশ সেনা নিহত ও আহত হয়েছেন বলে আমেরিকার শীর্ষ জেনারেল মার্ক মিলি বুধবার জানিয়েছেন। তার দাবি, রুশ হামলায় ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীও ‘সম্ভবত’ একই ধরনের হতাহতের শিকার হয়েছে।

যদিও মার্কিন ওই জেনারেলের সামনে আনা এই পরিসংখ্যান স্বাধীনভাবে যাচাই বা নিশ্চিত করা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে জেনারেল মিলির এই মন্তব্যে প্রায় নয় মাস পুরোনো সংঘাতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রুশ সেনা হতাহতের অনুমান সামনে এসেছে।

অন্যদিকে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ আসন্ন শীতকালে শিথিল হওয়ার সময় এসেছে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি উভয়পক্ষের মধ্যে কোনো ধরনের আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

আর তাই ইউক্রেনে সংকট নিরসনে কূটনীতির সম্ভাবনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জেনারেল মিলি উল্লেখ করেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আলোচনার বিষয়টি প্রথমবার প্রত্যাখ্যান করার পর মানুষের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং এতে করে আরও লক্ষাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটে।

নিউইয়র্কের ইকোনমিক ক্লাবকে জেনারেল মিলি বলেন, ‘সুতরাং যখন আলোচনার সুযোগ থাকে, যখন (আলোচনার মাধ্যমে) শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়... তখন সেই মুহূর্তটি কাজে লাগান।’

মার্ক মিলি বলেন, প্রায় নয় মাসের এই সংঘাত এখন পর্যন্ত ১৫ মিলিয়ন থেকে ৩০ মিলিয়ন ইউক্রেনীয় নাগরিক শরণার্থীতে পরিণত হয়েছেন এবং সম্ভবত ৪০ হাজার ইউক্রেনীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

মিলি আরও বলেন, ‘চলমান এই যুদ্ধে এক লাখেরও বেশি রাশিয়ান সৈন্য নিহত এবং আহত হয়েছেন। একই পরিমাণ হতাহত হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনীতেও। বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য এটি অনেক বড় দুর্ভোগ।’

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, অবশ্য বিশাল সংখ্যক হতাহত সত্ত্বেও ইউক্রেনে নিজের উদ্দেশ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে মস্কো। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া ঠিক আর কতদিন এভাবে আক্রমণ চালিয়ে যেতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

টিএম