ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির অধিকাংশ এমপি ও সদস্যদের সমর্থন নিয়ে বিনা প্রতিদন্দ্বিতায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ঋষি সুনাক— এই খবর প্রচারিত হওয়ার পরই চাঙ্গা ভাব দেখা গেছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ডলারের বিপরীতে প্রায় দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে ব্রিটেনের মুদ্রা পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মান। পাশপাশি, দেশটির পুঁজিবাজারেও লেনদেন দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার ৪৫ দিনের মাথায় লিজ় ট্রাসের ইস্তফার পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদে  ঋষি সুনাকের নাম আসে, যিনি চলতি বছর জুলাইয়ে বরিস জনসনের পদত্যাগের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে লিজ ট্রাসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।

কিন্তু সে বার চূড়ান্ত পর্যায়ে ট্রাসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। সেই পরাজয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই আবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর আসনের দৌড়ে শামিল হয়ে এ বার বাজিমাত করতে যাচ্ছেন সুনাক।

২০ অক্টোবর ট্রাস পদত্যাগ করার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেনি মরড্যান্ট এই দৌড়ে এতদিন তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন, তবে সোমবার তারা দু’জনই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

ব্রিটেনের রাজনীতিতে কয়েক বছর ধরেই চর্চায় রয়েছেন এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ভারতীয় বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির জামাতা সুনাককে ঘিরে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর।

যে সব ব্যক্তি ব্রিটেনের বাইরের বাসিন্দা কিন্তু পেশা সূত্রে ব্রিটেনে রয়েছেন, তাঁদের সে দেশের সরকারকে একটি বিশেষ কর দিতে হয়। ‘প্রভাব খাটিয়ে’ সেই কর ফাঁকির অভিযোগ ওঠে ঋষির স্ত্রী অক্ষতার বিরুদ্ধে।

ঋষি অবশ্য এই বিতর্ক তেমন আমল দেননি। ১৯৮০ সালের ১২ মে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে এক পাঞ্জাবি হিন্দু পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সুনাকের। সেই হিসেবে জন্মসূত্রেই তিনি ব্রিটিশ।

হ্যাম্পশায়ার ও উইনচেস্টার কলেজে স্কুল জীবন শেষে অক্সফোর্ডের লিংকন কলেজ থেকে ২০০১ সালে স্নাতক হন তিনি। পরে ২০০৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ নিয়ে পড়াশোনা করেন ঋষি। সেখানেই স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে তার আলাপ-পরিচয় হয়। তারপর ২০০৯ সালে বেঙ্গালুরুতে অক্ষতার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন ঋষি।

২০১৪ সালে রাজনীতিতে পা রাখেন ঋষি। সে বছর রিচমন্ড থেকে কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হন।

ব্রিটেনের বিত্তবানদের মধ্যে অন্যতম ঋষি সুনাক। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ঋষি ও তার স্ত্রীর অক্ষতার মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৭৩০ মিলিয়ন পাউন্ড। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি রয়েছে এই দম্পতির।

এসএমডব্লিউ