তুরস্কের উত্তরাঞ্চলের একটি কয়লা খনিতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে ২৫ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন এবং খনিতে আটকা পড়েছেন আরও অন্তত ৫০ জন। শুক্রবার সূর্যাস্তের সময় তুরস্কের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বারতিনের কৃষ্ণ সাগরের উপকূলবর্তী শহর আমাশরায় অবস্থিত খনিতে ঘটেছে এ দুর্ঘটনা।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সয়লু শুক্রবার সন্ধ্যার পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বিস্ফোরণের সময় খনিটিতে আমাদের ১১০ বা তার চেয়ে কিছু বেশিসংখ্যক শ্রমিক ভাই কাজ করছিলেন। তাদের মধ্যে ২৫ জন ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন এবং আটকা পড়েছেন প্রায় ৫০ জন।’

তিনি জানান, খনির ভেতরে দু’টি স্থানে আটকা পড়েছেন এই শ্রমিকরা। একটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৯৮৫ ফুট এবং অপরটি ১ হাজার ১৫০ ফুট গভীরে।  

তুরস্কের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে ইতোমধ্যে ওই খনি এলাকার ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে। সেসব ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, দুর্যোগব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্ধার বাহিনীর কর্মী, জরুরি স্বাস্থ্য সেবার কর্মী এবং নিহত ও আটকে পড়া শ্রমিকদের আত্মীয়-স্বজন ভিড় করেছেন ওই এলাকায়। অনেককেই কাঁদতে দেখা গেছে।

দুর্ঘটনার সংবাদ শোনার পর শনিবার যাবতীয় কর্মসূচি স্থগিত রেখে আস্তানা থেকে তুরস্কে পৌঁছেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তুরস্কে পৌঁছে এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রার্থনা করছি— নিহতের সংখ্যা যেন আর না বাড়ে এবং আমরা যেন আটকে পড়া সব শ্রমিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারি।’

শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে শনিবার পর্যন্ত মোট ৭০ শ্রমিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আমাশরার মেয়র রেকাই কাকির সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত যত শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই গুরুতর আহত।

সূর্যাস্তের সময় এই বিস্ফোরণ ঘটায় রাতের বেলায় কাঙ্ক্ষিত গতিতে উদ্ধার তৎপরতা চালানো যায়নি বলে উল্লেখ করেন মেয়র।

তুরস্কের দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা বিভাগের পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল, বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে এই বিস্ফোরণ। পরে বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের জন্য দায়ী খনির মধ্যে ছড়িয়ে পড়া মাত্রাতিরিক্ত মিথেন গ্যাস।

এর আগে সর্বশেষ ২০১৪ সালে খনি বিস্ফোরণ হয়েছিল তুরস্কে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সোমায় ঘটা সেই বিস্ফেরণে নিহত হয়েছিলেন ৩০১ জন।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএমডব্লিউ