একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর এবার দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। বুধবার (১২ অক্টোবর) দেশটি ২টি কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়।

এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর বরাবরের মতোই উল্লসিত উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকে দেশের কৌশলগত পারমাণবিক হামলার ক্ষমতার আরেকটি সফল প্রদর্শন আখ্যা দিয়ে এর প্রশংসা করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, বুধবার দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের এই পরীক্ষা চালানো হয় এবং এর লক্ষ্য ছিল কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র পরিচালনার জন্য কোরিয়ান পিপলস আর্মির ‘যুদ্ধের দক্ষতা এবং শক্তি বাড়ানো’।

সাম্প্রতিক সময়ে সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। আর দেশটির সর্বশেষ এই পরীক্ষা বিভক্ত কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে এবং পাঁচ বছরের মধ্যে পিয়ংইয়ং প্রথমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে পারে এমন আশঙ্কাও বাড়িয়ে দিয়েছে।

কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার নিক্ষেপ করা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সমুদ্রের ওপর দিয়ে ২ হাজার কিমি (১২৪০ মাইল) উড়ে গিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। তবে কোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে সেটি প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে এই পরীক্ষাটি উত্তর কোরিয়ার ‘শত্রুদের’ জন্য আরেকটি সুস্পষ্ট সতর্কবাণী বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন কিম জং উন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশকে ‘যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সংকট ও যুদ্ধকালীন সংকট থেকে দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করতে পারমাণবিক কৌশলগত সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালন ক্ষেত্রকে প্রসারিত করার কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং এ বিষয়ে সম্পূর্ণ উদ্যোগ নিতে হবে’।

এর আগে উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সবগুলোই ‘কৌশলগত পারমাণবিক’ মহড়া ছিল বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গত সোমবার জানায়। এতে আরও বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন ব্যক্তিগতভাবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

মূলত সিউল, টোকিও এবং ওয়াশিংটন সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সম্মিলিত নৌ মহড়া আরও বাড়িয়েছে। এই ঘটনা উত্তর কোরিয়াকে ক্ষুব্ধ করেছে কারণ যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ এই মহড়াকে (নিজেদের ওপর) আক্রমণের প্রস্তুতি হিসাবে দেখে পিয়ংইয়ং।

আর এসব কারণে প্রয়োজনীয় ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ হিসাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও বিস্ফোরণকে ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করে উত্তর কোরিয়া। কেসিএনএ জানিয়েছিল, এই দেশগুলোর যৌথ সামরিক মহড়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হয়। এমনকি এসব উৎক্ষেপণ ‘একটি প্রকৃত যুদ্ধের অনুকরণে’ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

কেসিএনএ’র দাবি, কৌশলগত পারমাণবিক অপারেশন ইউনিটগুলোর মহড়ার সময় সাম্প্রতিক এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বাহিনীকে তাদের ‘সামরিক কার্যকারিতা এবং যুদ্ধের প্রকৃত ক্ষমতা প্রদর্শনের সুযোগ দিয়েছে।

টিএম