মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর শিক্ষা অনুসরণ করতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। একইসঙ্গে জাতির সমৃদ্ধির জন্য মুহাম্মদ (সা.) এর চরিত্র অধ্যয়ন করতেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (৯ অক্টোবর) ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

ইসলামাবাদে ওই অনুষ্ঠানে ইমরান খান বলেন, ‘ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নবী মুহাম্মদ (সা.) একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র তৈরি করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে কোনো মুসলিম রাষ্ট্রই কল্যাণ রাষ্ট্র নয়। তবে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো রিয়াসত-ই-মদিনার সবচেয়ে কাছাকাছি ধরনের।’

ইমরান বলেন, তিনি যখন যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন, তখনই প্রথমবারের মতো দেখেছেন একটি কল্যাণ রাষ্ট্র কীভাবে কাজ করে। ইমরানের ভাষায়, ‘আমরা মানুষের যতটা যত্ন নিই, তার চেয়ে বেশি তারা তাদের পশুদের যত্ন নেয়। এমনকি বিপথগামী কুকুরদেরও আশ্রয় দেওয়া হয়।’

চলতি বছরের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব সমাজ মহানবী (সা.)-এর নীতি অনুসরণ করবে, সেসব সমাজই সমৃদ্ধি লাভ করবে। সে মুসলমান হোক বা না হোক। তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহ তাকে [হযরত মুহাম্মদ (সা.)]-কে রহমাতুল-লিল-আলামিন উপাধি দিয়েছেন... তিনি সমগ্র মানবজাতির জন্য আশীর্বাদ।’

রিয়াসাত-ই-মদিনা নিয়ে ইমরান বলেন, নবী (সা.) মানুষকে একত্রিত করেছেন এবং তাদের বিভক্ত করেননি। তিনি বলেন, ‘মুহাম্মদ আবদুহ নামে একজন বিখ্যাত মিশরীয় পণ্ডিত ইউরোপে গিয়ে বলেছিলেন, তিনি ইসলাম দেখেছেন কিন্তু (সেখানে) কোনো মুসলিম নেই। কিন্তু যখন তিনি মিশরে ফিরে আসেন, তিনি বলেছিলেন- তিনি এখানে মুসলমানদের দেখেছেন, কিন্তু ইসলামকে নয়।’

পিটিআই প্রধান বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিদেশে যান এবং অর্থের জন্য সহায়তা চান। অর্থ সাহায্য চাইতে গিয়ে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেন, পাকিস্তান খেলাপি হবে এবং এটি সমগ্র জাতির জন্য একটি লজ্জাজনক মুহূর্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিছু শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি বিদেশ থেকে আসে এবং এখানে সবাই তাদের সামনে মাথা নত করে। আমাদের এই পবিত্র দিনে আবার ভাবতে হবে। এই দেশটি এই জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি যে কিছু লোক অর্থ উপার্জন করবে এবং বাকিরা তাদের দাস হয়ে থাকবে।’

ইমরান বলেন, বিশ্বের সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার জন্য পাকিস্তানের যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে। তার ভাষায়, ‘আমাদের সব সম্পদ আছে। আমাদের সব কিছুই আছে। আমার মেয়াদে আমি জানতে পেরেছি আমরা কতটা সমৃদ্ধ।’

সাবেক এই পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি রহমাতুল-লিল-আলামিন কর্তৃপক্ষ তৈরি করেছি যাতে সবাই আমাদের নবী (সা.) এর চরিত্র সম্পর্কে জানতে পারে। তরুণদেরকে পশ্চিমা মূল্যবোধের মাধ্যমে টার্গেট করা হচ্ছে। আর তাই আমাদের নবী (সা.) এর চরিত্র নিয়ে আক্রমণ বন্ধ করতে হবে।’

‘আমাদের শিশুরাও এখন পশ্চিমা সংস্কৃতি অনুসরণ করতে শুরু করেছে। আমরা যখন ক্ষমতায় ফিরে আসব তখন আমরা রহমাতুল-লিল-আলামিন কর্তৃপক্ষকে পুনরুজ্জীবিত করব। আমাদের উচিত আমাদের সন্তানদের একটি মজবুত ভিত্তি দেওয়া। আমি তরুণদের বই পড়ার এবং আমাদের মহানবী (সা.)-এর চরিত্র অধ্যয়নের আহ্বান জানাই।’

টিএম