যুদ্ধক্ষেত্রে একের পর এক সামরিক বিপর্যয় ঘিরে সামরিক নেতৃত্ব নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন এক জেনারেল নিয়োগ দিয়েছে রাশিয়া। শনিবার ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে সংযুক্তকারী রাশিয়ার একমাত্র সেতুতে বিস্ফোরণ ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি-ক্ষয়ক্ষতির পর এই সেনা জেনারেল নিয়োগ করা হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের এলাকায় জয়েন্ট গ্রুপিং অব ফোর্সের কমান্ডার হিসাবে জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনকে নিয়োগ করা হয়েছে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের কাছ থেকে দখলে নেওয়া অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা দেয় মস্কো। কিন্তু এসব অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর পাল্টা প্রতিরোধে রুশ সৈন্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নতুন করে জেনারেল নিয়োগ করেছে মস্কো।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, নতুন নিয়োগকৃত জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনের (৫৫) জন্ম সাইবেরিয়া অঞ্চলের নোভোসিবিরস্ক এলাকায়। নব্বইয়ের দশকের তাজিকিস্তান, চেচনিয়াসহ অন্যান্য যুদ্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। সর্বশেষ ২০১৫ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম মিত্র সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সমর্থনে সিরীয় ভূখণ্ডে নিযুক্ত ছিলেন তিনি।

গত জুলাইয়ে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেনে নিযুক্ত রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিন। তবে তার পূর্বসূরির নাম কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

কিন্তু রাশিয়ার কিছু গণমাধ্যমের খবরে তার পূর্বসূরি হিসাবে জেনারেল আলেকজান্ডার ডভোর্নিকভের নাম বলা হচ্ছে; যিনি দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধের একজন জেনারেল এবং সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক কমান্ডার নিযুক্ত ছিলেন।

ইউক্রেন যুদ্ধে একের পর এক পরাজয় ঘিরে মস্কো অনেকটা অস্বাভাবিকভাবে সেখানে নতুন জেনারেল নিয়োগের এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছে।

সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চল থেকে রুশ বাহিনীকে বিতাড়িত করেছে ইউক্রেনের সৈন্যরা। পাল্টা এই আক্রমণের মাধ্যমে হাজার হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ রুশ সৈন্যদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে কিয়েভ।

রাশিয়ান সৈন্যরা দক্ষিণ খেরসন অঞ্চলের পাশাপাশি পূর্ব ইউক্রেনের লাইমান এলাকার নিয়ন্ত্রণও হারিয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রের এই বিপর্যয়ের কারণে রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত সপ্তাহে চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ রাশিয়ার একজন শীর্ষ জেনারেলকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া রাশিয়ার জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা আন্দ্রেই কার্তাপোলভ সামরিক কর্মকর্তাদের যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে ‘মিথ্যা বলা’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

সূত্র: এএফপি।

এসএস