ইউক্রেনে ‘সহিংসতা ও মৃত্যুর চক্র’ বন্ধ করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে প্রথমবারের মতো সরাসরি আবেদন করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। এমনকি ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তিনি ‘রক্ত ও অশ্রুর নদীতে’ আচ্ছন্ন বলেও মন্তব্য করেছেন পোপ।

রোববার (২ অক্টোবর) ভ্যাটিক্যানের সেন্ট পিটারস স্কয়ারে নিজের সাপ্তাহিক উন্মুক্ত প্রার্থনায় পোপ ফ্রান্সিস এই মন্তব্য করেন। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে পোপ ফ্রান্সিস অনেক মন্তব্যই করেছেন। তবে তার রোববারের মন্তব্যটিকে সবচেয়ে কড়া মন্তব্যগুলোর একটি বলে মনে করা হচ্ছে।

পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘আমার আবেদনটি প্রথমত হচ্ছে রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের প্রতি, একইসাথে তার মানুষের প্রতি ভালবাসার দোহাই, সহিংসতা ও মৃত্যুর এই চক্রটি বন্ধ করতে তাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘অপরদিকে, আগ্রাসনের ফলে ইউক্রেনের মানুষের ব্যাপক ভোগান্তিতে দুঃখভারাক্রান্ত হয়ে আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের প্রতিও একই আত্মবিশ্বাস নিয়ে আবেদন জানাই, তিনি যেন আন্তরিকভাবে শান্তি প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নেন।’

রোমান ক্যাথলিকদের এই নেতা, পারমাণবিক যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির প্রতিও নিন্দা জানিয়ে সেটিকে ‘উদ্ভট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যে গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেটি নিয়ে আমি গভীরভাবে দুঃখিত, যার পরবর্তী কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। প্রকৃতপক্ষে, এটি এমন পর্যায় পর্যন্ত পারমাণবিক (পরিস্থিতি তৈরির) ঝুঁকি বৃদ্ধি করে, যে তাতে শঙ্কা হয় তা বিশ্ব জুড়ে অনিয়ন্ত্রণযোগ্য ও বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।’

গত শুক্রবার আংশিকরূপে রুশ দখলে থাকা ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অধিভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেসময় ক্রেমলিনে দেওয়া ভাষণে পুতিন তার কথার আড়ালে ইউক্রেনের সংঘাতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার হুমকি দেন।

তিনি এর আগেও এমন মন্তব্য করেছিলেন, যেগুলোতে তিনি পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেছিলেন যে, ‘এটা কোনো কথার কথা নয়’। যদিও রোববার পোপের সর্বশেষ মন্তব্য নিয়ে ক্রেমলিন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

এদিকে ক্যাথলিক চার্চের এই প্রধান ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ায় সংযুক্ত করার নিন্দাও জানিয়েছেন।

আলজাজিরা বলছে, ফ্রান্সিস প্রায়শই ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ এবং সেখানে হওয়া প্রাণহানির নিন্দা করেছেন। তবে সহিংসতা ও মৃত্যু বন্ধের জন্য এবারই প্রথমবার পুতিনের কাছে সরাসরি ব্যক্তিগত আবেদন করলেন তিনি।

টিএম