দখলের আগে জাপোরিঝিয়া-খেরসনকে স্বাধীন ঘোষণা করলেন পুতিন
ইউক্রেনের জাপোরিজিয়া এবং খেরসন অঞ্চলকে ‘স্বাধীন’ বলে ঘোষণা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে জারি করা এক ডিক্রিতে এই ঘোষণা দেন তিনি।
জাপোরিঝিয়া ও খেরসন-সহ ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তুতি নেওয়ার মধ্যেই এই ঘোষণা সামনে এলো। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
বিজ্ঞাপন
এদিকে শুক্রবার ক্রেমলিনে একটি অনুষ্ঠান করে লুহানস্ক, দোনেতস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া অধিগ্রহণ করবে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া এই চারটি অঞ্চলের মস্কো নিযুক্ত প্রধানদেরও অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছে।
তাদের উপস্থিতিতে ওই চার অঞ্চলকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। স্বাভাবিকভাবেই ইউক্রেন-সহ গোটা পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়াও ঠিক এভাবেই দখল করেছিল রাশিয়া। আর ২০২২ সালের যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগে দোনেতস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন বলে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। বিশ্বের অন্য কোনো দেশ এই দুই অঞ্চলকে সেই স্বীকৃতি দেয়নি।
আর এবার খেরসন এবং জাপোরিঝিয়ায়ও ঠিক একই কাজ করল মস্কো। বস্তুত, এর আগে চারদিন ধরে এই অঞ্চলগুলোতে রাশিয়ায় যোগ দেওয়া বা না দেওয়া নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে রাশিয়ায় যোগদানের পক্ষে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আর সেই ফলাফলের প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
যদিও ইউক্রেন এবং পশ্চিমা সরকারগুলো এই ভোটকে জাল, অবৈধ এবং অস্ত্রের মুখে পরিচালিত বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে মস্কো বলছে, মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ‘ঐতিহাসিক মাতৃভূমিতে’ ফিরে যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নিজের প্রেসিডেন্শিয়াল ডিক্রিতে পুতিন বলেন, দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া এবং খেরসনে ‘আমি রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতার স্বীকৃতির আদেশ দিচ্ছি’।
সামরিক অভিযান শুরুর সাত মাসেরও বেশি সময় পর ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে - খেরসন, জাপোরিঝিয়া, দোনেতস্ক ও লুহানস্ক - রাশিয়ায় যুক্ত করতে চলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পুতিন প্রশাসন। এতে করে সাত মাস ধরে চলে আসা এই যুদ্ধের তীব্রতা নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, ‘রাশিয়ান ফেডারেশনে নতুন অঞ্চলগুলোর প্রবেশ’ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শুক্রবার সভাপতিত্ব করবেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল তিনটায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায়) গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্রাসাদের সেন্ট জর্জ হলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে রাশিয়ার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার ইউক্রেনজুড়ে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি ও তুরস্ক সেই মিছিলে সমর্থনও দিয়েছে।
টিএম