ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (ফাইল ছবি)

টানা সাত মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ এই আগ্রাসনে ইউক্রেন শুরুতে কোণঠাসা অবস্থায় থাকলেও পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে দেশটি এখন পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে। এতে করে সফলতার দেখাও পাচ্ছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি।

অবশ্য রাশিয়াকে মোকাবিলায় পশ্চিমা ও তাদের মিত্র বলে পরিচিত বহু দেশ ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়েছে। তবে পশ্চিমাদের অন্যতম প্রধান মিত্র হওয়ার পরও কিয়েভের পাশে অস্ত্র নিয়ে দাঁড়ায়নি ইসরায়েল। আর এতেই হতবাক হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আক্রমণ মোকাবিলায় কিয়েভকে ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী সিস্টেম দিতে ইসরায়েলের ব্যর্থতায় জেলেনস্কি ধাক্কা খেয়েছেন বলে শনিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন।

রয়টার্স বলছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দিতে বিশ্বের বহু দেশের কাছে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অনুরোধ করছেন। তিনি ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী ব্যবস্থা আয়রন ডোম সিস্টেমের কথা উল্লেখ করেছেন। ইসরায়েলি এই ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী সিস্টেমটি প্রায়ই গাজায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের ছোড়া রকেট আটকাতে ব্যবহৃত হয়।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি জানি না ইসরায়েলের কি হয়েছে। আমি সত্যি বলছি, সত্যি বলছি - আমি হতবাক, কারণ আমি বুঝতে পারছি না কেন তারা আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা দিতে পারেনি।’

গত বুধবার ফরাসি সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এ মন্তব্য করেন। আর শনিবার তার অফিস সাক্ষাৎকারের একটি রেকর্ডিং প্রকাশ করেছে। তবে সর্বশেষ সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কির করা মন্তব্যগুলো গত মার্চ মাসে তার করা মন্তব্যের চেয়ে শক্তিশালী ছিল।

সেসময় তিনি অস্ত্র প্রেরণে অনিচ্ছার জন্য ইসরায়েলের নিন্দা করেছিলেন। সে সময় ইসরায়েল ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠানোর কোনো প্রতিশ্রুতি না দিয়ে বলেছিল যে, তারা ইউক্রেনকে যতটা সম্ভব সাহায্য করবে।

অবশ্য কিয়েভকে অস্ত্র না দিলেও ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করেছে ইসরায়েল। বৈশ্বিক পরাশক্তি রাশিয়া সিরিয়ায়ও লড়াই করছে এবং ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে প্রায়শই ইরানপন্থি মিলিশিয়াদের ওপর আক্রমণ করে থাকে। আর তাই মস্কোর সাথে সম্পর্কের সম্ভাব্য টানাপোড়েনের বিষয়ে সবসময়ই সতর্ক রয়েছে ইসরায়েল।

এই বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি - সিরিয়া এবং রাশিয়ার সাথে পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েল একটি কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছে।’

তবে তিনি (ইসরায়েলের বিরুদ্ধে) কোনো অভিযোগ করছেন না বলেও জানান জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্টের ভাষায়, ‘আমি আসলে ঘটনাগুলো তুলে ধরছি। ইসরায়েলি নেতৃত্বের সাথে আমার যে কথোপকথন হয়েছে, তা ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য কিছুই করেনি।’

টিএম