নাইজেরিয়ায় মসজিদে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলা, নিহত ১৫ মুসল্লি
নাইজেরিয়ার একটি মসজিদে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। হামলার পর তারা সেখানে কমপক্ষে ১৫ মুসল্লিকে হত্যা করে। গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ার জামফারা প্রদেশের একটি মসজিদে এই ঘটনা ঘটে।
প্রদেশটির বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা প্রদেশের রুয়ান জেমা শহরের বুক্কুয়ুম স্থানীয় সরকার এলাকায় অবস্থিত জুমুআত কেন্দ্রীয় মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় এই হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে সেখানকার তিন বাসিন্দা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিমু মুস্তাফা বলেছেন, ‘সশস্ত্র দস্যুরা মোটরবাইকে এসে তাদের বন্দুক নিয়ে সোজা মসজিদে চলে যায় এবং বিক্ষিপ্তভাবে আমাদের গুলি করতে শুরু করে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বাসিন্দা জানান, স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে এই হামলাটি হয়। হামলায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
জামফারা প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্রের কাছে বাসিন্দাদের দেওয়া এই তথ্য নিশ্চিত করার জন্য ফোনকল বা ক্ষুদেবার্তা দেওয়া হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কোনো জবাব দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
রয়টার্স বলছে, স্থানীয়ভাবে ডাকাত নামে পরিচিত ভারী অস্ত্রধারী এসব সন্ত্রাসীরা গত দুই বছরে উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়াজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এসময় সেখানে তারা হাজার হাজার অপহরণের ঘটনা ঘটানোর পাশাপাশি শত শত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। এতে করে আফ্রিকার এই দেশটির এসব এলাকায় ভ্রমণ করা অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।
এর আগে চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে নাইজেরিয়ার একটি মসজিদে হানা দিয়ে অস্ত্রের মুখে বেশ কয়েকজন মুসল্লিকে তুলে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। মূলত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা প্রদেশের জুগু শহরের জুমুআত কেন্দ্রীয় মসজিদে ঘটে এ ঘটনা।
জামফারার রাজধানী গুসাউ থেকে জুগুর দুরত্ব ১৭০ কিলোমিটার। সন্ত্রাসীরা যখন হানা দেয়, সে সময় মসজিদটিতে আসরের নামাজ চলছিল।
সংবাদমাধ্যম সেসময় জানায়, মসজিদে ঢোকার পরেই কাপড়ের আড়াল থেকে অস্ত্র বের করে ফাঁকা গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা এবং সেখান থেকে বেশ কয়েকজন মুসল্লিকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।
গত কয়েক বছর ধরে দেশজুড়ে গড়ে ওঠা বেশ কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ও জঙ্গি সংগঠন বোকো হারামের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন নাইজেরিয়াবাসী। স্থানীয়ভাবে এসব সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে ‘ডাকাতদল’ বলা হয়। যেকোনো সময়, দেশের যে কোনো গ্রামে-শহরে হামলা চালায় এই ডাকাতদল।
সাধারণত মোটরসাইকেল ও গাড়িতে করে এসব ডাকাতদল আসে; হামলাস্থলে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়, লুটপাট করে এবং মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করে।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ বুহারি গত জানুয়ারির প্রথম দিকে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর থেকে নাইজারের বিভিন্ন স্থানে সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাত হচ্ছে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর।
টিএম