চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে গৃহবন্দী করা হয়েছে বলে ইন্টারনেটে একটি খবর ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। চীনা অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী বলেছেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতারা পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) প্রধানের পদ থেকে শি জিনপিংকে সরিয়ে দেওয়ার পর তাকে গৃহবন্দী করা হয়েছে।

এমনকি দেশটির রাজধানী বেইজিংও এখন সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে অনেক চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী দাবি করেছেন। নিউজ হাইল্যান্ড ভিশন নামের একটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট হু জিনাতাও, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির স্টান্ডিং কমিটির সাবেক সদস্য সং পিংকে প্ররোচনা দিয়েছেন এবং তিনি দেশটির সেন্ট্রাল গার্ড ব্যুরোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উজবেকিস্তানের সমরখন্দে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে গ্রেপ্তার কিংবা গৃহবন্দী করে রাখার এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট ও স্বল্প পরিচিত অনেক অনলাইন সংবাদমাধ্যমের এই খবরকে ‘গুজব’ বলে মনে হচ্ছে।

চীনের সর্বশেষ খবর হচ্ছে, দেশটির সাবেক জননিরাপত্তা উপমন্ত্রী সান লিজুনকে একটি স্থগিত মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জিলিন প্রদেশের চ্যাংচুন শহরের একটি আদালতের দেওয়া এই সাজা দুই বছর পর যাবজ্জীবন দণ্ডে রূপান্তরিত হবে। এতে প্যারোলে মুক্তির কোনও সম্ভাবনা নেই।

চীনের সেন্ট্রাল টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ৬৪৬ মিলিয়ন ইউয়ান ঘুষ নেওয়ার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সান লিজুনকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র নিজের কাছে রাখার দায়েও তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১৬ অক্টোবর চীনের কমিউনিস্ট পার্টির জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। কংগ্রেসের মাধ্যমে তিনি তৃতীয় মেয়াদে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশটির ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই কংগ্রেসের আগে পার্টির ভিন্ন মতাবলম্বী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অপসারণ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ শি জিনপিংয়ের ইচ্ছার গুরুত্ব তুলে ধরছে।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে গ্রেপ্তার এবং গৃহবন্দী করার ব্যাপারে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের ওয়েবসাইটেও কোনও সংবাদ পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরাসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও এ ধরনের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।

এই পরিস্থিতিতে আমরা নিশ্চিত করতে পারি, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে গৃহবন্দী করার খবরটি ‘গুজব’ এবং ‘অতিরঞ্জিত’।

ফ্যাক্ট চেক

দাবি

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে গৃহবন্দী করা হয়েছে 

সিদ্ধান্ত

শি জিনপিংকে গৃহবন্দী করে রাখার ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি

রেটিং

দাবিটি মিথ্যা

এসএস