করোনাভাইরাস ও তার প্রভাবে সৃষ্ট মহামারির ধকল এখনও চলছে বিশ্বে, তার মধ্যেই এই ভাইরাসটির সমগোত্রীয় নতুন একটি ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। নতুন এই ভাইরাসটির নাম রাখা হয়েছে খোস্টা-২।

প্রাথমিক গবেষণায় জানা গেছে, মূল করোনাভাইরাস বা সার্স-কোভ ২ এবং নতুন এই খোস্টা-২ একই ভাইরাস পরিবারের সদস্য। সেই ভাইরাস পরিবারের নাম সার্বেকোভাইরাস।

আরও সাদৃশ্য রয়েছে দু’টি ভাইরাসের মধ্যে; যেমন— দুই ভাইরাসেরই প্রধান পোষক বা বাহক প্রাণীর নাম বাদুড়। ২০১৯ সালে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের সি ফুড মার্কেট থেকে বাদুড়ের মাধ্যমে ছড়িয়েছিল করোনাভাইরাস, আর খোস্টা ২ ভাইরাসের অস্তিত্ব প্রথম শনাক্ত হয়েছে রাশিয়ার বাদুড়ের দেহে।

মার্কিন বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সার্স-কোভ ২ ভাইরাসের মতোই খুব সহজে এটি মানবদেহের কোষে প্রবেশ করে বংশবিস্তারের মাধমে গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুঝুঁকি তৈরিতে সক্ষম; এবং উদ্বেগের ব্যাপার হলো— করোনার টিকায় এই ভাইরাসের কোনো ক্ষতি হয় না।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের টাইম ম্যাগাজিনে নতুন এই ভাইরাসটির ওপর একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বাদুড়দের দেহে খোস্টা ২’র সমধর্মী নামের আরও একটি ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই ভাইরাসটির নাম দেওয়া হয়েছে খোস্টা ১।

তবে এই ভাইরাসটি বাদুড় ও অন্যান্য প্রাণীর দেহে যত সহজে প্রবেশ করতে পারে, মানবদেহে পারে না। ফলে খোস্টা ২’র তুলনায় খোস্টা ১ মানুষের জন্য অনেক কম ঝুঁকিপূর্ণ।

মার্কিন এই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য মাইকেল লেটকো দেশটির সাময়িকী নিউজউইককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, বাদুড়ের দেহে শনাক্ত হলেও করোনাভাইরাসের মতো প্যাঙ্গোলিন, র‌্যাকুন, পাম সিভেটের মতো অন্যান্য প্রাণীদেহকেও পোষক হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষমতা আছে খোস্টা ২’র।

নিউজউইককে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মতো এই ভাইরাসটিও বিশ্বজুড়ে মহামারি উস্কে দেবে কিনা— তা গবেষণার এই পর্যায়ে আমরা এখনই বলতে পারছিনা। তবে উদ্বেগের ব্যাপার হচ্ছে—সার্স- কোভ ২ ভাইরাসের সমধর্মী ভাইরাস হলেও ভাইরাসটি করোনা টিকা প্রতিরোধী এবং যদি করোনার সঙ্গে মিলিতভাবে এই ভাইরাসটি কোনোভাবে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে, সেক্ষেত্রে গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দেওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।’

এসএমডব্লিউ