তেলের দাম আরও বাড়ল
ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় অন্যান্য দেশের পরমাণু আলোচনা বাধাগ্রস্ত হওয়া এবং রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে ফের বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ড ক্রুড জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ৯২ সেন্ট বেড়ে হয়েছে ৯৩ দশমিক ৭৬ ডলার। আর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের অপর বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই)ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ৭১ সেন্ট বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮৭ দশমিক ৫০ ডলার।
বিজ্ঞাপন
গত শুক্রবার এক ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৪ দশমিক ১ শতাংশ ও ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। তার চার দিনের মাথায় আন্তর্জাতিক বাজারে ফের বাড়ল অপরিশোধিত তেলের দাম।
ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরকারী ৩ দেশ ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি শনিবার বলেছে, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে নিজেদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত চুক্তি জ্যাকোপা স্বাক্ষর করেছিল ইরান।
কিন্তু শনিবার সেই চুক্তি স্বাক্ষরকারী ৩ দেশ ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি বলেছে, জ্যাকোপা কার্যকর করতে ইরানের সত্যিকার সদিচ্ছা রয়েছে কিনা— সে বিষয়ে ‘গভীর সংশয়’ আছে।
পারমানবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ এই তিন ইউরোপীয় দেশের ‘গভীর সংশয়ের’ অর্থ— আন্তর্জাতিক বাজারে ইরানের তেল প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও বৃদ্ধি পাওয়া। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকে তেলের সরবরাহ কমে যাওয়াও তেলের দাম বৃদ্ধির একটি বড় কারণ।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজার পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শেষ দিকে আরও বাড়বে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঘোষণা অনুযায়ী, ৫ ডিসেম্বর থেকে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি শিল্পোন্নত দেশসমূহের জোট জি৭ অবশ্য ঘোষণা দিয়েছে, জ্বালানি তেল বিক্রি করে রাশিয়া যেন অতিরিক্ত মুনাফা না করতে পারে, সেজন্য আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের মূল্য বেঁধে দেবে পশ্চিমা বিশ্ব। তবে রাশিয়া এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এদিকে, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক ক্রেতা চীন তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছে। দেশটির সরকারের ‘জিরো কোভিড’ নীতির জেরে শিল্পোৎপাদন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমে যাওয়াই তার মূল কারণ।
অপরিশোধিত তেলের বাজার বিশ্লেষক জুন রং ইয়িপ বাজারের বর্তমান অবস্থাকে ‘উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘যদি চীনের করোনা নীতি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং উন্নয়নশীল বিশ্বে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোদমে শুরু হতে আরও বিলম্ব হয়, সেক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে তেলের বাজার আরও ভারসাম্যহীনতা দেখা দেবে।’
এসএমডব্লিউ