একটি ইউটিউব চ্যানেলে এই দম্পতি তাদের প্রেমের গল্প শেয়ার করেছেন

প্রেম আর ভালোবাসা দিয়ে বিশ্বের যেকোনো কিছু জয় করা সম্ভব। তেমনি অনেক পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও প্রেম যে দু’জন মানুষকে একত্রিত করতে পারে; তা প্রমাণ করেছেন এক দম্পতি।

তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে বাস্তবে। এমবিবিএস পাস করার পর পেশাগত দায়িত্বপালনে একটি হাসপাতালে যুক্ত হয়েছিলেন এক নারী চিকিৎসক। পরে তিনি ভালোবেসে বিয়ে করেছেন একই হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে।

আরও পড়ুন: ভিডিও: উদ্বোধনের সময় ভেঙে পড়ল নবনির্মিত সেতু

ব্যতিক্রমী এই ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে। ব্যতিক্রমী এই পাকিস্তানি দম্পতির অনন্য প্রেমের গল্প ইন্টারনেটে ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারী ওই এমবিবিএস চিকিৎসকের নাম কিশওয়ার সাহিবা এবং তার স্বামী ও হাসপাতালের ওই সাফাইকর্মীর নাম শাহজাদ। তারা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ওকারা জেলার দিপালপুর শহরের বাসিন্দা।

মূলত কিশওয়ারই শাহজাদকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং বিয়ের পর একটি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের অনন্য প্রেমের গল্প ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায়। ‘মেরা পাকিস্তান’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে পাকিস্তানি এই দম্পতি তাদের প্রেমের গল্প শেয়ার করেছেন।

আরও পড়ুন: ঠিক সময়ে খুলল না প্যারাসুট, মাটিতে আছড়ে মারা গেলেন টিকটক তারকা

সংবাদমাধ্যম বলছে, পাকিস্তানের যে হাসপাতালে কিশওয়ার সাহিবা চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন, ওই একই হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে আসতেন শাহজাদ। অনেক সময় চা-নাস্তাও দিয়ে যেতেন। সেখানে দেখেই শাহজাদকে পছন্দ হয় চিকিৎসক কিশওয়ার সাহিবার।

একপর্যায়ে শাহজাদকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন তিনি। এরপর এক দিন বিয়ে করেন দু’জন। নিজের প্রেমের গল্প পাকিস্তানের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ইউটিউবার হরিশ ভাট্টির কাছে প্রকাশ করেছেন কিশওয়ার-শাহজাদ। তাদের ভালোবাসার গল্প শুনে আনন্দে ভাসছেন অনলাইন ব্যবহারকারীরা।

নিজেদের গল্প বলার সময় স্বামী শাহজাদ স্পষ্ট করে জানান, এমনটা যে হতে পারে, তিনি ভাবতেই পারেননি! ভালোবাসার প্রথম প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন কিশওয়ারই। যখন হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে এসেছিলেন শাহজাদ, তখন তার মোবাইল নম্বরটা চেয়ে নেন কিশওয়ার।

আরও পড়ুন: গাড়ি ভাড়ার টাকা নেই, ছোট ভাইয়ের মরদেহ কোলে নিয়ে হাঁটল বড় ভাই

এরপর হোয়াটসঅ্যাপে দু’জনের কথাবার্তা চলতে থাকে। একদিন শাহজাদ একটি ‘স্ট্যাটাস মেসেজ’ দিয়েছিলেন হোয়াটসঅ্যাপে। সেই দেখে এক মুহূর্তেই সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেন কিশওয়ার। শাহজাদকে নিজের কর্মস্থল হাসপাতালে ডেকে পাঠান তিনি। তারপর সোজাসুজি জানিয়ে দেন ভালোবাসার কথা।

অবশ্য আচমকা এ ধরনের কথা শুনে চমকে গিয়েছিলেন শাহজাদ। জ্বর এসে গিয়েছিল তার। সেই জ্বরের চিকিৎসা হয়েছিল এবং স্বাভাবিকভাবে সেটি করেছিলেন কিশওয়ারই। আর এরপরই দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন।

কেন শাহজাদকে ভালো লেগেছিল কিশওয়ারের? উত্তরে এই নারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, এক বারের জন্যও শাহজাদকে দেখে তার ‘চা-ওয়ালা’ মনে হয়নি। সাদাসিধে মানুষটাকেই ভালো লেগে গিয়েছিল চিকিৎসক কিশওয়ারের।

অবশ্য কিশওয়ার মেনে নিলেও শাহজাদকে তার স্বামী হিসাবে মানতে পারেননি কিশওয়ারের সহকর্মীরা। তাদের কটুক্তির জন্য ওই হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন কিশওয়ার। এখন তার ইচ্ছা, ওই এলাকাতেই একেবারে নিজের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলবেন। প্রত্যাশিত ভাবেই পাশে দাঁড়িয়েছেন শাহজাদ।

আরও পড়ুন: হবু বউ পাস না করার শঙ্কায় স্কুল জ্বালিয়ে দিলেন যুবক

তবে সহকর্মীরা না মানলেও স্বামী শাহজাদের ব্যক্তিত্বের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন কিশওয়ার। নারী এই চিকিৎসক বলছেন, তিনি আগে শাহজাদকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন কারণ তার সাথে দুর্দান্ত বিবাহের সম্ভাবনা তিনি হারাতে চান না। এমনকি নিজের জীবনের সকল সিদ্ধান্ত তিনি মাত্র একদিনে নিয়েছিলেন বলেও জানান কিশওয়ার।

অন্যদিকে শাহজাদ জানান, তিনি তিনজন চিকিৎসকের অফিস কক্ষ পরিষ্কার করতেন এবং চা পরিবেশন করতেন। একদিন কিশওয়ার তার ফোন নম্বর চেয়ে নেন, আর এর পরে তারা একে অপরের সাথে কথা বলতে শুরু করেন।

আরও পড়ুন: ভিডিও: শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে মেয়ের পা ধোয়া দুধ পান করলেন বাবা-মা

এদিকে ইউটিউবে তাদের হৃদয়গ্রাহী প্রেমের গল্প ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের আনন্দিত করেছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘অসাধারণ প্রেমের গল্প। সুন্দর দম্পতি।’

অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘সুন্দর দম্পতি’।

টিএম