ছবি : টিআরটি

যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপেীয় মিত্রদের চাপের কারণে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা ভারতের নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের জ্বালানিতেল বিষয়ক মন্ত্রী হারদীপ সিং পুরী বুধবার এ ইস্যুতে তার দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি বুধবার এক সাক্ষাৎকারে ভারতের কেন্দ্রীয় জ্বালানিমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছিল, পশ্চিমা বিশ্বের নেতাদের চাপের মুখে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা ভারতের আছে কিনা।

জবাবে হারদীপ সিং পুরী বলেন, ‘না, তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই, সম্ভাবনাও নেই। আমাদের হিসেব স্পষ্ট; ভারতের জনগণ, যারা ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের নির্বাচন করেছেন— জ্বালানির সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে তারা ভোগান্তিতে পরবেন। আর সেই ভোগান্তি কত ভয়াবহ হতে পারে, আমাদের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়।’

‘জনগণের স্বার্থকেই আমরা সবার আগে বিবেচনা করব। এই কারণে রাশিয়া থেকে তেল কেনা আমরা বন্ধ করছি না। যদি অন্য কোনো দেশ রাশিয়ার থেকেও কম দামে তেল বিক্রি করেতে চায়, সেক্ষেত্রে আমরা ব্যাপারটি ভেবে দেখতে পারি।’

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের শাস্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর একরাশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে রাশিয়ার জ্বালানি তেল ও কয়লাও।

এদিকে করোনা মহামারির দুই বছর পেরোনোর পর দেশে দেশে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও শিল্পোৎপাদন পুনরায় শুরু হওয়ায় চলতি বছরের শুরু থেকে বিশ্বজুড়ে বাড়ছিল তেলের চাহিদা, সেই সঙ্গে মূল্যও। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে থাক আরও দ্রুতগতিতে।

নিষেধাজ্ঞা জারির পর রাশিয়া নিজের ‘বন্ধুপ্রতীম’ বিভিন্ন দেশকে হ্রাসকৃত মূল্যে জ্বালানি তেলে কেনার প্রস্তাব দেয়। এই তালিকায় সবার আগে ছিল চীন-ভারত। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত ছয় মাসে এ দুটি দেশ রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল কিনেছে এবং এখনও কিনছে।

দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ট মিত্র ভারতের এই পদক্ষেপে স্বাভাবিকভাবেই অসন্তুষ্ট হয় পশ্চিমা বিশ্ব। রাশিয়ার তেল কেনা থেকে বিরত রাখতে ভারতকে চাপও দিতে থাকেন পশ্চিমা নেতারা।

সাক্ষাৎকারে সিএনবিসির এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতের কেন্দ্রীয় জ্বালানিতেল বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ভারতকে দোষারোপ করার কোনো নৈতিক অধিকার ইউরোপের আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইউরোপ আমাদের চেয়ে অন্তত চারগুণ বেশি তেল কিনেছে। এসব আমরা বুঝি।’

এসএমডব্লিউ