ইতিহাসে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় পাকিস্তানের কৃষকরা তাদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনও হিসেব-নিকেশ কষছেন। গত কয়েক সপ্তাহের নজিরবিহীন এই বন্যায় দেশটির এক তৃতীয়াংশ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দেশটিতে বন্যার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ইতোমধ্যে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।

সিন্ধু প্রদেশের কৃষক আশরাফ আলী ভানব্রো বলেছেন, ‘আমরা বন্যায় ৫০ বছর পিছিয়ে গিয়েছি।’ তার আড়াই হাজার একর জমির তুলা এবং আখ কাটার উপযোগী হলেও বন্যায় এখন সব একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন।

বর্ষা মৌসুমের রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশটির ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তবে এই ব্ন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তানের দক্ষিণের সিন্ধু প্রদেশ।

প্রমত্তা সিন্ধু নদী দ্বারা বিভক্ত প্রদেশটি। যে কারণে বন্যার পানিতে সিন্ধু নদীর উভয় তীর উপচে পানি সর্বত্র প্রবেশ করেছে। আর এতে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা তৈরি করেছে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত। প্রবল বর্ষণের কারণে প্রদেশজুড়ে পানির তীব্র ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে এই নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা কয়েকশ বছরের পুরোনো সেচ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে।

কৃষক আশরাফ আলী বলেন, এই প্রদেশে টানা ৭২ ঘণ্টা ধরেও বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টি এবং বন্যায় তার ২৭০ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, এটি কেবল সার এবং কীটনাশকের খরচ... আমরা এতে মুনাফা অন্তর্ভুক্ত করিনি। ফসলের বাম্পার ফলন হতো। যা হিসেব করলে ক্ষয়ক্ষতি আরও অনেক বেশি হতে পারে।

বন্যায় তলিয়ে যাওয়া আবাদি জমির পানি নিষ্কাশন করা না হলে আশরাফের মতো অনেক কৃষক আগামী শীতে গমের চাষ করতে পারবেন না।

সিন্ধ প্রদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সুক্কুর শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের সাম্মু গ্রামের নিজ খামারে দাঁড়িয়ে আশরাফ বলেন, আমাদের  মাত্র এক মাস আছে। এই সময়ের মধ্যে পানি সরিয়ে ফেলা না হলে গমের আবাদ করা যাবে না।  

সূত্র: এএফপি।

এসএস