পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এখন পানির নিচে
চলমান ঐতিহাসিক বন্যায় পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ সম্পূর্ণভাবে পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জলবায়ু মন্ত্রী শেরি রেহমান। তিনি বলেছেন, বিধ্বংসী আকস্মিক এই বন্যায় রাস্তা, বাড়িঘর এবং ফসল ভেসে গেছে। যা পাকিস্তানজুড়ে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। চলমান এই বন্যায় দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১১শ ছাড়িয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার শেরি রেহমান বলেন, ‘এটি যেন এক বিশাল সমুদ্র। পাম্প করে পানি সরিয়ে নেওয়ার মতো কোনো শুষ্ক জমি নেই। এটিকে অকল্পনীয় অনুপাতের সংকট’ বলেও অভিহিত করেন তিনি।
কর্মকর্তাদের মতে, গত জুনে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর সৃষ্ট এই বন্যায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৬ জন মারা গেছে। গত এক দশকের মধ্যে রেকর্ড করা সবচেয়ে ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার জন্য পাকিস্তানের সরকার জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছে।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে পাকিস্তানের জলবায়ু মন্ত্রী শেরি রেহমান বলেন, ‘আক্ষরিকভাবে, পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এই মুহূর্তে পানির নিচে। দুর্যোগের এই মাত্রা অতীতের সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে। অতীতে আমরা এমন ভয়াবহ মাত্রায় কিছু দেখিনি।’
বিবিসি বলছে, সোমবার পাকিস্তানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যায় আরও ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি বলেছেন, বন্যায় নিহতদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলছেন, ‘আমরা এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝার চেষ্টা করছি।’
চলমান এই বন্যায় পাকিস্তানে ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি পাকিস্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি সাতজনের মধ্যে একজন পাকিস্তানি ঐতিহাসিক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এছাড়া ভয়াবহ এই বন্যায় পাকিস্তানের ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। প্রাথমিকভাবে আমাদের অনুমান, পাকিস্তান এক হাজার কোটি ডলারের বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে।’
ইকবাল আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা এক হাজারেরও বেশি মানুষ হারিয়েছি। প্রায় ১০ লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ আসলে তাদের সম্পূর্ণ জীবিকা হারিয়েছে।’
টিএম