ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় রাজ্য গুজরাটে মুসলিম নারী বিলকিস বানুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ হয়েছে।

২০০২ সালে গুজরাটের বহুল আলোচিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় বিলকিস বানুর পরিবারের অন্তত ১৪ সদস্যও নিহত হন।

বিলকিস বানু ধর্ষণ মামলার আসামিরা ১৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শেষে মুক্তি পেয়েছেন। শনিবার দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।

ভারতীয় চলচ্চিত্র তারকা এবং নারী অধিকার কর্মী শাবানা আজমি দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বিলকিস বানুর সাথে যা ঘটেছে, তার পরিবারের সাথে যা ঘটেছে, আমরা আমাদের দেশে দাঁড়িয়ে তা দেখতে পারি না। সেজন্য আমরা সবাই একত্রিত হয়ে আমাদের আওয়াজ তুলব।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অদিতি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, নারী বিদ্বেষ আর পিতৃতান্ত্রিকতা এতটাই বেড়েছে এবং স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে যে, এখন মানুষের জন্য ধর্ষণ স্বাভাবিক হয়ে গেছে।

এদিকে, পৃথকভাবে দেশটির অবসরপ্রাপ্ত শতাধিক বেসামরিক কর্মী ভারতের প্রধান বিচারপতিকে একটি চিঠি লিখেছেন। সেই চিঠিতে তারা বলেছেন, ধর্ষকদের মুক্তি সব নারীর নিরাপত্তার ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।

ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনের দিন গত ১৫ আগস্ট বিলকিস বানু ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত আসামিদের মুক্তির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে গুজরাটের সরকার।

এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত আসামিরা গোধরা কারাগারের বাইরে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় আত্মীয়-স্বজনরা তাদের মিষ্টি দেয় এবং শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাদের পা স্পর্শ করে।

বিলকিস বানু ধর্ষকদের মুক্তির এই সিদ্ধান্তকে ‘অবিচার’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, এই ঘটনা ন্যায়বিচারের প্রতি তার বিশ্বাসকে ‘নাড়িয়ে দিয়েছে।’

সূত্র: বিবিসি।

এসএস