তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন দুই রণতরী, নজর রাখছে চীন
চীনের সঙ্গে প্রবল উত্তেজনার মাঝে ব্যাপক বিতর্কিত তাইওয়ান প্রণালীর আন্তর্জাতিক জলসীমায় প্রবেশ করেছে মার্কিন নৌবাহিনীর দুটি রণতরী। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর এক ঘোষণায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সংসদের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর চীনের সঙ্গে স্বশাসিত এই দ্বীপ ভূখণ্ডের প্রবল উত্তেজনার মাঝে প্রথমবারের মতো মার্কিন রণতরী ওই এলাকায় গেছে।
বিজ্ঞাপন
পেলোসির সফরের পর চীন ওই এলাকায় নজিরবিহীন সামরিক মহড়ার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্বের অন্যান্য দেশের নৌবাহিনী সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিয়মিতভাবে তাইওয়ান প্রণালীতে তাদের রণতরী প্রবেশ করিয়েছে।
ওয়াশিংটন বলেছে, গাইডেড মিসাইল ক্রুজার ইউএসএস অ্যান্টিটাম এবং ইউএসএস চ্যান্সেলরসভিল তাইওয়ান প্রণালীর আন্তর্জাতিক জলসীমায় স্বাধীনভাবে চলাফেরা করেছে।
বেইজিং বরাবরই এই ধরনের পদক্ষেপকে উসকানিমূলক হিসাবে মনে করে। গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে চীন।
রোববার চীনের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা তাইওয়ান প্রণালীতে দুটি জাহাজের চলাচল নজরদারি করেছে। এছাড়া চীনা সামরিক বাহিনী উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং যেকোনও ধরনের উসকানিকে পরাজিত করার জন্য প্রস্তুত আছে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে রণতরীর যাত্রা ‘স্বাধীন ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির প্রদর্শন।
এদিকে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রণতরী দুটি দক্ষিণ দিকে যাত্রা করেছে এবং তাইওয়ানের নৌবাহিনী পর্যবেক্ষণ করছে। তবে সেখানকার পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক আছে।
তাইওয়ানকে চীনের সরকার একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করে এবং বেইজিং শেষ পর্যন্ত বেয়ারা এই প্রদেশ চীনের সঙ্গে একীভূত হবে বলেও বিশ্বাস করে। আর সেটি করতে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগও করা হতে পারে বলে দীর্ঘদিন ধরে হুঁশিয়ার করে আসছে চীন।
কিন্তু তাইওয়ানের অনেকেই স্বশাসিত এই দ্বীপ ভূখণ্ডকে আলাদা রাষ্ট্র মনে করেন। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও এই অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়নি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের বিবাদের আরেকটি কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে তাইওয়ান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ইস্যুতে কূটনৈতিক তৎপরতা ব্যাপক জোরদার করেছে।
তাইপে-বেইজিং সংকটে ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের নীতি রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, চীন যদি কখনও তাইওয়ানে আক্রমণ চালায় তাহলে সেখানে সামরিক হস্তক্ষেপ করবে ওয়াশিংটন।
‘এক চীন’ নীতি নিয়ে আপত্তি থাকলেও বেইজিংয়ের চীনা সরকারকেই কেবল স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে তাইপের পরিবর্তে বেইজিংয়ের সাথেই আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে ওয়াশিংটনের। তবে তাইওয়ানকে প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চীনের যেকোনও ধরনের আক্রমণ ‘গুরুতর উদ্বেগের’ কারণ হবে।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
এসএস