গত মাসের শেষের দিকে মার্কিন ড্রোন থেকে ছোড়া ‘হেলফায়ার বা নরকের গোলা’র আঘাতে নিহত আল কায়েদার নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আফগানিস্তান। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সশস্ত্র শাসকগোষ্ঠী তালেবানের মুখপাত্র এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, আয়মান আল-জাওয়াহিরির মরদেহ পায়নি তালেবান এবং এখনও তার মরদেহের সন্ধানে তদন্ত চলছে।

এর আগে, গত ৩১ জুলাই (রোববার) কাবুলের স্থানীয় সময় সকাল ৬ টা ১৮ মিনিটে একটি ড্রোন থেকে তথাকথিত ‘হেলফায়ার বা নরকের গোলা’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে হত্যার দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র্র। 

চলতি বছর মার্কিন কর্মকর্তারা জাওয়াহিরির পরিবার— তার স্ত্রী, মেয়ে এবং অন্য সন্তানদের কাবুলের একটি ‘সেফ হাউসে’ আশ্রয় নিয়েছেন বলে শনাক্ত করেন। পরবর্তীতে জাওয়াহিরিকেও একই স্থানে শনাক্ত করেন তারা।

কয়েক মাসের পর্যালোচনায় মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কাবুলের সেই ‘সেফ হাউসে’ জাওয়াহিরিকে সঠিকভাবে শনাক্ত করেন। চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুর দিকে তারা মার্কিন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের এই ব্যাপারে জানাতে শুরু করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভ্যান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তা জানান।

মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা অভিযান পরিচালনার জন্য একাধিক স্বাধীন উৎসের তথ্যের মাধ্যমে জীবনের (জাওয়াহিরির) একটি ছক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলাম। জাওয়াহিরি একবার কাবুলের নিরাপদ সেই বাড়িতে পৌঁছালেও সেখান থেকে বের হয়েছেন কিনা সেসম্পর্কে কর্মকর্তারা জানতেন না। পরে তাকে বাড়ির বারান্দায় শনাক্ত করেন তারা। আর সেখানেই একাধিক চূড়ান্ত আঘাত হানা হয় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

গত ২৫ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার মন্ত্রিসভার প্রধান সদস্য ও উপদেষ্টাদের নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠকে জাওয়াহিরিকে হত্যা করা হলে তালেবানের সাথে আমেরিকার সম্পর্কে কেমন প্রভাব পড়বে সেব্যাপারে আলোচনা করেন। সিচুয়েশন রুমের অন্যান্যদের কাছ থেকে মতামত নেওয়ার পর জো বাইডেন ‘একটি নিখুঁত উপযোগী বিমান হামলার’ অনুমোদন দেন। তবে এতে তিনি শর্ত জুড়ে দেন যে, এই হামলায় বেসামরিক হতাহতের ঝুঁকি সর্বনিম্ন রাখতে হবে।

পরে ৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র্রের একটি ড্রোন থেকে তথাকথিত ‘হেলফায়ার বা নরকের গোলা’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে আয়মান আল জাওয়াহিরিকে হত্যা করা হয়।

এসএস