সরবরাহ কমালো ওপেক প্লাস, দাম বাড়ল তেলের
জ্বালানি তেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারী দেশসমূহের জোট ওপেক প্লাসের সরবরাহ হ্রাসের সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান তেল শোধনাগারের কয়েকটি শাখা অকার্যকর হয়ে পড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১০১ দশমিক ৬৭ ডলার; আর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের অপর বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯৫ দশমিক ২১ ডলার।
বিজ্ঞাপন
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে যে দামে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে, তা গত তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বুধবার ওপেক প্লাসের নেতৃস্থানীয় সদস্য সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বাজারে মন্দাভাব দেখা দেওয়ায় তেলের উৎপাদন হ্রাসের পরিকল্পনা নিয়েছে জোটের বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্র। তার পরের দিনই বাড়ল দাম।
জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষক সংস্থা সিটি অ্যানালিস্টস এক বার্তায় বলেছে, ‘ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার অর্থ হলো সৌদি আরব তেলের বাজার রক্ষা করতে আন্তরিকভাবেই তৎপর; এবং যদি প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ওপেক প্লাসের সদস্য সব রাষ্ট্রকে তেলের উৎপাদন কমাতে প্রভাবিত করতেও পিছপা হবে না দেশটি।’
এদিকে, ওপেক প্লাসের অপর সদস্য ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে দেশটি থেকে জ্বালানি তেলের সরবরাহ বিশ্ব বাজারে আসতে নানান বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। পরমাণু নিয়ন্ত্রণ চুক্তি সম্পূর্ণ পুনরুজ্জীবিত ও কার্যকর না করা গেলে এই সমস্যা কাটবে না।
ইরান জ্বালানি তেলের সরবরাহ আসা শুরু করলে তেলের দাম কিছুটা কমবে বলে ধারণা আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের। পরমাণু চুক্তি কার্যকরের বিষয়টি এখনও চলমান অবস্থায় আছে।
জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল হাইনেস ও সোনি কুমারি রয়টার্সকে জানান, নতুন পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন হওয়া শুরু হলে ইরান থেকে প্রতিদিন ১০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল আসবে বিশ্ব বাজারে।
‘ইরান থেকে জ্বালানি তেলে এলে বাজার কিছুটা ভারসাম্যপূর্ণ হবে, কিন্তু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। বাজার সুস্থির করতে হলে রাশিয়ার তেলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলতে হবে পশ্চিমা বিশ্বের।’
এদিকে, বিশ্বের জ্বালানি তেলের বৃহত্তম ভোক্তা যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান তেল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশটিতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিও বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য খানিকটা দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান তেল শোধন কোম্পানি হুইটিং রিফাইনারির ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের কয়েকটি শাখায় কার্যক্রম বন্ধ আছে। ফলে তেলের সরবরাহ খানিকটা কমেছে এবং তার প্রভাব পড়েছে দেশটির পরিশোধিত তেলের বাজারে।
এসএমডব্লিউ