রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ফাইল ছবি)

ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের সমালোচনা করায় দেশটির একজন রাজনীতিককে আটক করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। রুশ ওই রাজনীতিক ক্রেমলিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত এবং সম্প্রতি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন।

বুধবার (২৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটককৃত রুশ ওই রাজনীতিকের নাম ইয়েভজেনি রোইজম্যান। তিনি রাশিয়ার ইয়েকাতেরিনবার্গ শহরের সাবেক মেয়র।

রুশ বার্তাসংস্থা তাস জানিয়েছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের সমালোচনা করায় ক্রেমলিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত রাজনীতিবিদ ইয়েভজেনি রোইজম্যানকে আটক করা হয়েছে। ইয়েকাতেরিনবার্গ নিরাপত্তা পরিষেবার বরাত দিয়ে রুশ এই বার্তাসংস্থাটি আরও জানিয়েছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে অসম্মান করার অভিযোগে রোইজম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

রয়টার্স বলছে, রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যে কয়েকজন মুষ্টিমেয় সমালোচক রয়েছেন তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন ইয়েভজেনি রোইজম্যান। ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে একাধিক বড় বিক্ষোভের পর মেয়র পদে জয়ী হন তিনি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।

মস্কো অবশ্য ইউক্রেনে তাদের এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে। এছাড়া যুদ্ধের শুরুতে পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড আক্রান্ত হলেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মূল মনোযোগ এখন দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, রাশিয়া মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শিল্প এলাকা ডনবাস দখল করতে চাইছে। এই ভূখণ্ডটি লুহানস্ক এবং দোনেতস্ক নামে দু’টি অঞ্চল নিয়ে গঠিত। সেখানে রুশপন্থি দু’টি বিদ্রোহী স্ব-ঘোষিত রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রাশিয়ার দাবি, নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালানো হচ্ছে। তবে এই সামরিক অভিযানকে যুদ্ধ বলায় বা রাশিয়ার পদক্ষেপের সমালোচনা করার জন্য বেশ কয়েকজন কর্মীকে বিচার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

অবশ্য যুদ্ধ বা সামরিক অভিযান যেটিই হোক- রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনী কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং রাশিয়াকে তার বাহিনী প্রত্যাহার করতে বাধ্য করার প্রচেষ্টায় মস্কোর ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো।

টিএম