আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পত্তির অভিযোগে দিন কয়েক আগে ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের এক সরকারি কর্মকর্তার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় ইকোনমিক অফেন্সেস উইং (ইওডব্লিউ)-এর কর্মকর্তারা। অভিযুক্ত ওই সরকারি কর্মকর্তার নাম সন্তোষ পাল। তিনি রাজ্যটির রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসার (আরটিও)।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ জানিয়েছে, সন্তোষ পাল নিজে আরটিও কর্মকর্তা হলেও তার স্ত্রী রেখা পাল একই অফিসে করণিকের কাজ করেন। শুধু স্ত্রী নন, আরটিওতে কাজ করেন সন্তোষের বহু আত্মীয়ও। সন্তোষের তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ রুপি এবং প্রচুর স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছেন ইওডব্লিউ কর্মকর্তারা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, গত দু’বছর ধরে সন্তোষের গতিবিধি এবং তার সম্পত্তির ওপর নজর রাখছিল ইওডব্লিউ। গত দু’বছরে তার সম্পত্তি আয়ের তুলনায় বেড়েছে ৬৫০ গুণ। মাসে ৬৫ হাজার রুপি বেতন পান সন্তোষ। এই বেতনে বিপুল সম্পত্তির অধিকারী তিনি কীভাবে হলেন, তা নজরে আসে ইওডব্লিউ-র।

সংস্থাটি তদন্তে নামতেই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসে। ইওডব্লিউ সূত্রে খবর, স্থাবর এবং অস্থাবর মিলিয়ে সন্তোষের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০০ কোটি রুপি। মধ্যপ্রদেশের জবলপুরের শতাব্দীপুরমে ১০ হাজার বর্গফুটের দু’টি বাড়িও রয়েছে সন্তোষের।

এছাড়াও গৌরীঘাটে ১,২৪৭ বর্গফুট এবং ১,১৫০ বর্গফুটের দু’টি বাড়িসহ আরও দু’টি বাড়ি রয়েছে তার নামে। ইওডব্লিউ তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালালেও তারা জানিয়েছে, সন্তোষের মোট ছয়টি বাড়ি রয়েছে। তার নামে রয়েছে দু’টি দোকানও।

ইওডব্লিউ আরও জানিয়েছে, সন্তোষের একটি খামারবাড়ি রয়েছে। সেই খামারবাড়ির আয়তন প্রায় দেড় একর। একটি স্করপিও এবং আই ২০ গাড়ি রয়েছে। এ ছাড়াও দু’টি মোটরবাইকও রয়েছে তার।

সন্তোষ তার বিলাসবহুল বাড়িতে ছোটখাটো একটি সিনেমাহলও বানিয়েছেন। কোনো বিলাসবহুল সিনেমাহলের সঙ্গে এর ফারাক খুঁজে পাওয়া ভার বলে দাবি ইওডব্লিউ-র অফিসারদের। সেই সিনেমাহলে রয়েছে দামি সোফা থেকে বিনোদনের যাবতীয় আয়োজন।

শুধু সিনেমাহলই নয়, তিনতলা বিলাসবহুল বাড়িতে রয়েছে লিফট, পাঁচ হাজার বর্গফুটের বিশাল বাগান, সুইমিং পুল এবং কয়েক লাখ রুপির ঝাড়বাতি। আরও চমকের বিষয়, সন্তোষ একটা ছোটখাটো বারও বানিয়েছেন বাড়িতে। আর সেখানে থরে থরে সাজানো দামি মদ। এছাড়াও রয়েছে বিশাল একটি কনফারেন্স হল।

টিএম