নারী যাত্রীর সন্দেহবাতিক মন, প্লেন বসে থাকল ৬ ঘণ্টা
নির্দিষ্ট সময়েই বিমানবন্দর থেকে প্লেন উড্ডয়ন করবে। সেই হিসেবে সময় মতো বিমানবন্দরে হাজিরও হয়েছেন একটি নির্দিষ্ট ফ্লাইটের প্রায় সকল যাত্রী। আকাশে উড়াল দিতে প্রস্তুত ফ্লাইটও। তবে শেষ মুহূর্তে এক নারী যাত্রীর অভিযোগে ঘটল বিপত্তি।
এরপর নির্ধারিত সময়ের ৬ ঘণ্টা দেরিতে উড্ডয়ন করল প্লেনটি। মূলত পুরুষ এক সহযাত্রীর মোবাইল ফোনে সন্দেহজনক ম্যাসেজ সম্পর্কে সতর্কতা উচ্চারণ করার পরই এই ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ম্যাঙ্গালুরু শহরে। সোমবার (১৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ভারতের ম্যাঙ্গালুরু শহরে একজন নারী যাত্রী তার সহযাত্রীর মোবাইল ফোনে আসা একটি সন্দেহজনক বার্তা সম্পর্কে অ্যালার্ম উত্থাপন করার পর একটি ফ্লাইট ছয় ঘণ্টা বিলম্বিত হয়। ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটটি ম্যাঙ্গালুরু থেকে মুম্বাই যাওয়ার কথা ছিল।
সংবাদমাধ্যম বলছে, রোববার সকাল ১১টায় ম্যাঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে মুম্বাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটের। ওই ফ্লাইটে ভ্রমণের জন্য বিমানবন্দরে আসেন এক ব্যক্তি। সঙ্গে ছিলেন তার প্রেমিকা। তবে ওই ব্যক্তি মুম্বাইগামী ফ্লাইটের যাত্রী হলেও তার প্রেমিকা যাবেন বেঙ্গালুরুতে। তাই বেঙ্গালুরুগামী ফ্লাইট ধরার কথা ওই প্রেমিকার।
ঘটনা এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। তবে মুম্বাইগামী প্লেনে ওই ব্যক্তি উঠে বসার পরও প্রেমিকার সঙ্গে মোবাইলে বার্তা আদানপ্রদান চলছিল। তা-ই দেখে ফেলেন পাশের আসনের সহযাত্রী এক নারী। গোপনে সেই বার্তা পড়ে নারীর চক্ষু যেন চড়কগাছ।
দ্রুতই তিনি কেবিন ক্রুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সঙ্গে সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) সঙ্গে কথা বলে এয়ার বে-তে আবারও ফিরিয়ে আনা হয় ফ্লাইটটি। এরপর ওই ফ্লাইটের ১৮৫ জন যাত্রীকে প্লেন থেকে নামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়।
তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয় সব ব্যাগ-লাগেজ। কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি। নারী সহযাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকেও দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর পর মুম্বাই পাড়ি দেয় ইন্ডিগোর ফ্লাইটটি। তবে ততক্ষণে পার গেছে ৬ ঘণ্টা।
এ তো গেল মুম্বাইগামী ফ্লাইটের অবস্থা। তবে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ও নারী সহযাত্রীর অভিযোগের পর ওই ব্যক্তির প্রেমিকাও আর বেঙ্গালুরুগামী ফ্লাইটে উঠতে পারেননি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, বিমানবন্দরে একসঙ্গে সময় কাটানোর পর ফ্লাইটে বসেও প্রেমিকার সঙ্গে বার্তা আদানপ্রদান করছিলেন ওই ব্যক্তি। সেখানেই এমন কিছু মনগড়া কথা দু’জন বলেন, যা তৃতীয় কেউ দেখলে সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক।
ম্যাঙ্গালুরু সিটি পুলিশের কমিশনার এন শশী কুমার জানিয়েছেন, দু’জনেই রসিকতা করে ম্যাসেজে এমন কথা বলছিলেন বলে মনে হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি।
অবশ্য ওই ব্যক্তির বক্তব্য জানা না গেলেও প্রেমিকার সঙ্গে আদান-প্রদান করা ব্যক্তিগত ম্যাসেজ ওই নারী সহযাত্রী গোপনে পড়ায় এবং তার সন্দেহবাতিক মন ওই ঘটনাকে যে এতোদূর টেনে এনেছে তা বলাই যায়।
টিএম