কাবুলে পিটিয়ে ছত্রভঙ্গ করা হলো নারীদের বিক্ষোভ
পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসার এক বছর পূর্তির দু’দিন আগে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে কয়েক ডজন নারীর বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে তালেবান। এ সময় নারীদের বেধড়ক লাঠিপেটার পাশাপাশি ফাঁকা গুলিও ছুড়েছে তালেবানের যোদ্ধারা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, প্রায় ৪০ জন নারী তাদের অধিকারের দাবিতে আফগানিস্তানের রাজধানীতে মিছিল করেছেন। পরে তালেবানের সদস্যরা লাঠিচার্জ এবং শূন্যে গুলি ছুড়ে সেই মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। তালেবানের যোদ্ধারা বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারীদের মোবাইল ফোনও কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
বিজ্ঞাপন
আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর থেকে নারীদের অধিকার কঠোরভাবে সীমিত করেছে তালেবান। শনিবার কাবুলের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারীদের হাতে বিভিন্ন ধরনের ব্যানার দেখা যায়। এ সময় তালেবানের ক্ষমতাগ্রহণের দিন গত বছরের ১৫ আগস্টকে ইঙ্গিত করে লেখা একটি ব্যানারে দেখা যায়, ‘১৫ আগস্ট একটি কালো দিন।’ বিক্ষোভকারী নারীদের ‘রুটি, রুজি আর স্বাধীনতার’ দাবিতে স্লোগানও দিতে শোনা যায়।
বিক্ষোভকারী একজন নারী বিবিসিকে বলেন, ‘এবার তারা আমাদের বেশি মারধর করেনি। এর আগে তারা আমাদের যেভাবে মারধর করেছে, এবারে তা ভিন্ন ছিল। তারা আকাশে গুলি ছুড়েছে। আমরা ভীত থাকলেও মেয়েদের অধিকারের দাবিতে লড়তে বেরিয়েছি। যাতে কমপক্ষে মেয়েদের স্কুলগুলো খুলে দেয় তালেবান।’
দেশটিতে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে নারীদের স্বাধীনতা সীমিত করে বিভিন্ন ধরনের আদেশ জারি করা হয়েছে। এসব আদেশে নারীদের বেশিরভাগ সরকারি চাকরি ও মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এবং পুরুষ অভিভাবক ছাড়া ৭০ কিলোমিটারের বেশি দূরে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
গত মে মাসে নারীদের কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো পর্দা করার আদেশ জারি করে দেশটির সশস্ত্র এই গোষ্ঠী। যদি কোনও নারী তা মানতে অস্বীকার করেন তাহলে তার পুরুষ অভিভাবকদের তিন দিনের জন্য কারাগারে পাঠানো হতে পারে বলে জানানো হয়। তবে এই আদেশ দেশটিতে সবসময় কার্যকর করা হচ্ছে না।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে ছোট ছোট বিক্ষিপ্ত কিছু বিক্ষোভ সমাবেশ দেখা গেছে। তবে ভিন্নমতাবলম্বীদের এসব বিক্ষোভ শক্তহাতে দমন করেছে তালেবান।
সূত্র: বিবিসি।
এসএস